তাদের আরেকটা বিষয়ে আমি বলতে চাই, অগ্নি সন্ত্রাস করা তাদের অভ্যাস, যেমন গাইবান্ধা বিএনপির কার্যালয়ে নিজেরা আগুন দিয়ে সেই দোষ আওয়ামী লীগের ওপর চাপিয়েছে। ওরা এ ধরনের কিছু ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলাবাসীর সঙ্গে আলোচনাকালে কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের দেওয়া তথ্যর জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
এ সময় সাইমুম সরওয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বলেন,‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি আপনাকে একটি তথ্য দিতে চাই, যা আপনার মাধ্যমে সারা দেশবাসী জানতে পারবে। বিএনপি নেতারা তাদের নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা এখন জাল ব্যালট পেপার ছাপানো শুরু করেছে। ইতিমধ্যে আমাদের কর্মীরা তিনজনের কাছ থেকে জাল ব্যালট পেপার ধরেছে। বিএনপির এখন কোনো কাজ নেই, প্রচারণা নেই, তারা এলাকায় যায় না, তাদের পোস্টার যায় না কিন্তু তারা জাল ব্যালট এলাকায় পৌঁছে দিচ্ছে। এটি সব মানুষকে জানানো দরকার’।
সাইমুম সরওয়ারের এমন তথ্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওদের অভ্যাস আছে, আমি জানি বিএনপির কোনো প্রচারণা নেই, কিছুই নেই, কিন্তু কিছু একটা ষড়যন্ত্র তারা করছে। তারা যে ষড়যন্ত্রে আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা, বড় চোর, মহা চোর, দাগি, খুনি, বড় একটা চোর বসে আছে লন্ডনে ওরা নিশ্চয় ষড়যন্ত্র করছে। আর তাদের দোসররা এখানে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাদের একটা যে দুরভিসন্ধি আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আরেকটা করতে পারে-সন্ত্রাস। তাই এ ব্যাপারে আমাদের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে এবং সব জনগণকে সজাগ থাকতে হবে। তাদের এসব অপকর্ম মানুষকে প্রতিহত করতে হবে। মানুষ রুখে দাঁড়ালে এরা পারবে না। কারণ তারা যে অগ্নি সন্ত্রাস শুরু করেছিল, মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়াল তার বিরুদ্ধে, তারা থামতে বাধ্য হলো। নাকে খত দিয়ে খালেদা জিয়া কোর্টে হাজিরা দিয়েছে, কাজেই এদের এ চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রে তাদের সফল হতে দেওয়া যাবে না। মানুষ শান্তি চায়, শান্তিপূর্ণ ভাবে মানুষ ভোট দিতে চায়, কারণ ভোট তার অধিকার, এখানে জাল ব্যালট পেপার তৈরি করে, চক্রান্ত করে বা ষড়যন্ত্র করে, সন্ত্রাস করে বা টাকা ছড়িয়ে তারা যেন জনগণের সেই রায় কেড়ে নিতে না পারে তাই দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে। আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করবো এ ব্যাপারে যদি সজাগ সক্রিয় থাকেন তাহলে তাদের এ ধরনের ষড়যন্ত্র আমরা মোকাবেলা করতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হওয়ার একটাই লক্ষ্য, আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন। সেই নির্বাচনে আমি নৌকা মার্কায় আপনাদের ভোট চাই। কারণ নৌকা এ দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা বাংলাদেশের উন্নয়ন দিয়েছে, নৌকা অগ্রগতি দিয়েছে, নৌকাই বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার দিয়েছে। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে এ কক্সবাজারকে ঘিরে। মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল বসেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে, ৮০ কিলোমিটার মেরিনড্রাইভ আমরা করে দিয়েছি, সাবরাংয়ে ট্যুরিজমসহ কক্সবাজারের ব্যাপক উন্নয়ন কমসূচি আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। চট্টগ্রাম থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন আমরা সম্প্রসারণ করছি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী নৌকার প্রার্থী কক্সবাজার-১ আসনের মো. জাফর আলম, কক্সবাজার-২ আসনের আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-৩ অসনের সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার-৪ অসনের শাহীন আকতারকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে কক্সবাজারবাসী যে মহানুভবতা দেখিয়েছে তা বিশ্ববাসী দেখেছে। এ জন্য আমি কক্সবাজারের প্রশাসন এবং বিশেষ করে সাধারণ জণগণকে ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের আন্তরিকতার কারণে সারা বিশ্ববাসী দেখছে বাংলাদেশ কীভাবে মানবতার পক্ষে দাঁড়ায়।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, নৌকার চার প্রার্থী ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) ফোরকান আহম্মদ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮
এসবি/টিসি