সকাল থেকেই সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে। তবে আকাশ ফুটে বের হওয়া মায়াবী সূর্যের সেই কিরণ উত্তরের শীতার্ত মানুষগুলোর শরীরের উষ্ণতা ছড়াতে পারছে না।
বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
ফলে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মধ্য পৌষের কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছে রাজশাহীর সাধারণ মানুষ। তীব্র শীতে কৃষিতেও দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। বিশেষ করে কৃষকের মাঠে থাকা আলুর ফসলে লেট ব্লাইট (পচন রোগ) ছড়িয়ে পড়েছে। আর বোরোক্ষেতের বীজতলায় দেখা দিয়েছে কোল্ড ইনজুরি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বাংলানিউজকে বলেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলেই আলুক্ষেতে লেট ব্লাইট দেখা দেয়। এজন্য এসময় কৃষকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। থানা বা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আলুক্ষেতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্র কমছে। বর্তমানে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই অবস্থার উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই। রাতে কুয়াশা বাড়তে শুরু করলে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেই অবস্থান করবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সপ্তাহজুড়ে মৃদু থেকে মাঝারি এবং শেষভাগে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে রাজশাহী ও আশপাশের জেলার ওপর দিয়ে। এসময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে।
ফলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। বেশি দুর্ভোগ ছিন্নমূল মানুষের।
বিশেষ করে চর ও গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। মানুষগুলোকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে কয়েকদিন থেকেই। এরইমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও বেসকারি সংস্থা শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় কম। নির্বাচনের কারণে সরকারিভাবে এখনও শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি।
রাজশাহী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, এরইমধ্যে জেলার ৯ উপজেলার জন্য ৩৭ হাজার ৮০০ কম্বল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মহানগর এলাকার জন্য দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার কম্বল। তবে নির্বাচনের কারণে এগুলো এখনও বিতরণ শুরু হয়নি। নির্বাচন শেষ হওয়া মাত্র কম্বলগুলো শীতার্তদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
** উত্তরের জনপদে শীতের দাপটে ভোটের উত্তাপ
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘন্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
এসএস/আরবি/