বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) থেকে টার্মিনালগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু হয় বলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানী থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ভালো পরিবহনের বাস কাউন্টারগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না টিকিট।
আর দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর শ্যামলী, কল্যাণপুর, গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে এমন আমেজের চিত্র।
রোববার (৩০ ডিসেম্বর) দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে ভোট। সরকারি ছুটি একদিন বা শুধু ভোটের দিন হলেও রাজধানী ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকার ভোটাররা ভোটের আগে পরে নিয়েছেন অতিরিক্ত ছুটি। আর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় বাড়ি ফেরার মূল চাপটা বৃহস্পতিবার রাতে গেছে বলে জানা যায় বাস কাউন্টার সূত্রে। তবে বাস টার্মিনালগুলো ঘিরে ঈদের আমেজ থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া, নির্ধারিত সময় পার হবার পর বাস ছাড়া বা অন্য কোনো ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া যায়নি এখনও। এছাড়া রাস্তায় কোনো যানজটের খবরও এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
গাবতলী বাস টার্মিনাল ও কল্যাণপুর থেকে যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া, চট্টগ্রাম, বরিশাল, নোয়াখালী, কক্সবাজার, উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়। এখানকার নামকরা পরিবহনের কাউন্টারগুলোতে পাওয়া যায়নি কোনো অগ্রিম টিকিট।
এ বিষয়ে গাবতলীর খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেটগামী সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শরীফ আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের চার থেকে পাঁচদিন আগে ঠিক যে রকম চাপ থাকে, সে রকম যাচ্ছে এই নির্বাচন উপলক্ষে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আজ পর্যন্ত কোনো অগ্রিম টিকিট খালি নেই, সব বিক্রি হয়ে গেছে। আগামীকাল রাতে গাড়ি চলাচল করবে না। তবে সকালের কয়েকটি টিকিট পাওয়া যাবে। এখন টার্মিনাল থেকে নির্ধারিত সময়ে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা গাড়িতে উঠছেন।
কল্যাণপুর এলাকায় চট্টগ্রাম অভিমুখী অপেক্ষমাণ যাত্রী অভিজিৎ দাস বাংলানিউজকে বলেন, আমি গত মঙ্গলবার এসেছিলাম, গতকাল রাতের টিকিট কাটতে। কিন্তু তখন তা পাইনি, তাই আজকের টিকিট কেটেছি। বাস দুপুর দুইটায় ছাড়বে। আর অতিরিক্ত ভাড়া কোথাও নিতে দেখিনি। ছুটি তিনদিনের পেয়ে বাড়ি যাচ্ছি। অনেকটা ঈদের মতো লাগছে।
এদিকে, মহাখালী বাস টার্মিনালে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া একতা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার স্বপন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ঈদের মতো করে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাসের ছাদে অতিরিক্ত যাত্রী যেনো পরিবহন না করা হয় এ জন্য কড়া নির্দেশনা রয়েছে। আর যাত্রীদের চাপ সবচেয়ে বেশি গেছে গতকাল রাতে। সকালেও কিছুটা চাপ ছিল, আবার রাতে চাপ বাড়বে হয়তো। এখন কাউন্টারে যেসব যাত্রী আছে, তারা সবাই অগ্রিম টিকিট কাটা অপেক্ষমাণ যাত্রী। তবে বাস টার্মিনালগুলো থেকে তুলনামূলক কম দূরত্বের যাত্রার গাড়িগুলোতে নেই অগ্রিম টিকিটের কোনো চাল। মহাখালী থেকে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, সিরাজগঞ্জসহ তুলনামূলক অন্যান্য কম দূরত্বের এলাকার বাসের কাউন্টারে যাত্রীরা আসছেন, আর টিকিট কেটে বাসে উঠছেন। বাস যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে গেলেই ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
ময়মনসিংহ অভিমুখী এনা পরিবহনের যাত্রী সুমাইয়া বাংলানিউজকে বলেন, আজকে ঢাকা শহরে একেবারেই জ্যাম নেই। খুব দ্রুত টার্মিনালে এসে পৌঁছেছি। খবর নিয়েছি ওই রাস্তায়ও এতো জ্যাম নেই। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ে বাড়ি পৌঁছে যাবো। ভোট দেওয়ার জন্যই বাড়িতে যাওয়া, তবে মনে হচ্ছে ঈদের ছুটিতে যাচ্ছি।
এদিকে, বাস টার্মিনালের খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা ভালো যাচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন বাংলানিউজকে।
মহাখালী বাস টার্মিনালের খাবার বিক্রেতা রফিক বলেন, সরকারি বড় কোনো ছুটি ছাড়া বাস টার্মিনালে যাত্রীদের তেমন ভিড় হয় না। এছাড়া ঈদের সময় যে রকম বেচা-বিক্রি হয়, অন্যান্য ছুটির সময়ে তা হয় না। কিন্তু এই নির্বাচনের সময় একদম ঈদের মতো পরিবেশ যাচ্ছে। বিক্রি ভালো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮
এমএএম/টিএ