ফলে পদ্মাপাড়ের ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতের তীব্রতায় আবারও কাবু হয়ে পড়েছে। উত্তরের হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা বাতাসে স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
সকালে ঘন কুয়াশার চাদর ভেদ করে ভোরের সূর্যের দেখা মিলেছে। তবে সূর্যের তাপ ছিল না। সন্ধ্যায় খোলা আকাশের নিচে থাকা শীতার্ত মানুষগুলোর শরীরে উষ্ণতা ছড়াতে খরকুটো জ্বালাতে হয়েছে। কেউ আবার আশ্রয় নিয়েছে রেলস্টেশনের কম্পাউন্ডে। কিন্তু শরীরে মোটা কাপড় না থাকায় শীতের হাত থেকে সেখানেও রেহাই মেলেনি। শীতার্তরা এখন বিত্তবানদের শীতবস্ত্রের দিকে তাকিয়ে।
এদিকে, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসছে। ফলে দ্বিগুণ শীত অনুভূত হচ্ছে রাজশাহীতে। শিশু ও বৃদ্ধরা অসহনীয় এ শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগে। হাসপাতালে বাড়ছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত নবজাতক শিশুর সংখ্যা। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন অ্যাজমায় আক্রান্ত রোগীরা। ফলে শীতে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে।
রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক জানান, শীত বেড়ে যাওয়ায় সব বয়সের মানুষ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এসব রোগীর মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মৈত্র জানান, এক সপ্তাহ থেকে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৯ ডিসেম্বর রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে কেবল ২ জানুয়ারি তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল। এছাড়া গত এক সপ্তাহ থেকে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ওঠানামা করছে।
আবহাওয়ার এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৩/৪ দিন শেষে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। বয়ে যেতে পারে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এ সময় তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৯
এসএস/আরআর