মঙ্গলবার (০৮ জানুয়ারি) এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দাবি জানান শ্রমিক নেতারা।
উত্তরা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক ছাঁটাই, টার্গেটের চাপ বাড়ানো এবং শ্রমিক নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, সাম্প্রতিক শ্রমিক আন্দোলন বিভিন্ন গ্রেডে মজুরি সমানহারে বৃদ্ধি না পাওয়ারই কারণ।
শ্রমিক নেতারা বলেন, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিকরা এ মাসেই বেতন পাওয়া শুরু করেছে নতুন গ্রেডে। মাস শেষে কাঙ্ক্ষিত বেতন না পেয়েই শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, শ্রমিকরা মাঠে নেমে এসেছে। এছাড়া কিছু কারখানা ভিত্তিক দাবি দাওয়াও আছে এই শ্রমিকদের।
তারা বলেন, শ্রমিকদের অসন্তোষের মূলে না গিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভকে কেবল ‘ষড়যন্ত্র’ বললে শিল্পের মঙ্গল হবে না। বিশেষত ৩য়, ৪র্থ, ৫ম গ্রেডের শ্রমিকদের মূল মজুরি অন্যান্য গ্রেডের সাথে সঙ্গতি রেখে বৃদ্ধির দাবি মেনে নিয়ে শিল্পের সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান শ্রমিক নেতারা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গেজেট প্রকাশ করে ৭টি গ্রেডের শ্রমিকদের মজুরির হার নির্ধারণ করে। তখনই আমাদের সংগঠন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি এবং আমাদের জোট গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দাবি করেছিলাম শিল্পের মূল চালিকা শক্তি অপারেটরদের মূল মজুরি পুননির্ধারণের জন্য। কেননা ২০১৩ সালে নির্ধারিত ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম গ্রেডের শ্রমিকদের মূল মজুরি শতকরা ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে ৫ বছরে ২০১৮ সালে এসে যা দাঁড়িয়েছে সে তুলনায় মূল মজুরি তো বাড়েইনি বরং ৩য় গ্রেডের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা কমে গেছে।
অন্যদিকে মালিকপক্ষ মোট মজুরি বৃদ্ধি দেখালেও শ্রমিকদের বঞ্চিত করার জন্য মূল মজুরি কমিয়ে দিয়েছে। আর মূল মজুরির ওপর ভিত্তি করেই যেহেতু ওভারটাইম, উৎসব বোনাস, ইনক্রিমেন্ট ও চাকরির অবসানজনিত ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হয়ে থাকে ফলে মূল মজুরি কমিয়ে শ্রমিকদের ব্যাপকভাবে ঠকানো হয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির কথা বলে হিসাবের মার-প্যাঁচে মজুরি কমিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা শ্রমিকদের পক্ষে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
নেতৃবৃন্দ পাশাপাশি বলেন, ডিসেম্বর মাসে যখন আশুলিয়ার শ্রমিকরা হিসাবের মার-প্যাঁচ বন্ধ করে মূল মজুরি বৃদ্ধির দাবি করেন, তখন মালিক ও সরকারের তরফ থেকে বলা হয় নির্বাচন শেষে এ সমাস্যার সমাধান করা হবে। নির্বাচন পেরিয়ে গেলেও এ ব্যাপারে মালিকপক্ষ এখনো উদাসীন। ফলে শ্রমিকদের আন্দোলন আরো ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রেড ইউনিয়নয় এবং সংগঠন করার যথাযথ অধিকার না থাকায় রাজপথে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করা ছাড়া অন্যকোনো উপায় নাই শ্রমিকদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৯
এমজেএফ