আদালতে হাজির হয়ে মঙ্গলবার (০৮ জানুয়ারি) নিজের বাবার কুকর্মের কথা ফাঁস করে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরী।
গত ০৬ জানুয়ারি নিহত শিশুর বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে ‘ধর্ষণের পর হত্যা’র অভিযোগ এনে প্রতিবেশী নাহিদের বিরুদ্ধে গেণ্ডারিয়া থানায় মামলা করেন।
পড়ুন>>‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ ডেকে নিয়ে দুই শিশুকে হত্যা
পুলিশ জানায়, পুলিশ আসার খবর পেয়ে পালানোর সময় তৃতীয় তলার বাসা থেকে জানালা দিয়ে লাফ দেয় অভিযুক্ত নাহিদ। এতে তার দুই পা ভেঙে যায়। বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে গুরুতর আহত নাহিদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা যায়, নাহিদের বাসার কাছেই একটি টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন নিহত আয়েশার মা-বাবা। তার মা-বাবা স্থানীয় কারখানায় কাজ করেন। দিনে গেণ্ডারিয়ার সাধনা ঔষধালয়ের সামনের গলিতে সমবয়সীদের সঙ্গে খেলা করতো শিশু আয়েশা।
অন্যদিনের মতো গত ৫ জানুয়ারি বিকেলেও খেলা করছিল সে। পরে সন্ধ্যার দিকে টিনশেড বস্তির পাশের চারতলা বাড়ির সামনে তার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। রাতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে নাহিদের মেয়ে জানান, ঘটনার দিন শনিবার সন্ধ্যার দিকে বাসার বারান্দায় ছিলেন। হঠাৎ তার বাবার রুম থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান তিনি। ভেতরে গিয়ে দরজা খুলে দেখেন, তার বাবা বিছানায় আর শিশু আয়েশা তার কোলে কাঁদছে।
‘এ সময় বাবা আমায় ধমক দিয়ে চলে যেতে বলেন। আমি অন্য রুমে চলে যাই। পরে তিনি (নাহিদ) শিশু আয়েশাকে তিন তলার জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। ’
৫ বছর আগে নাহিদের স্ত্রী মারা যান। তবে এরপর আর বিয়ে করেনি সে। ১২ বছরের মেয়েকে নিয়ে ওই বাসায় থাকতেন।
এদিকে অভিযুক্ত নাহিদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবেশী শিশু আয়েশাকে খিচুরি খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে নেয় নাহিদ। পরে তাকে তিনতলা থেকে ফেলে হত্যা করে।
‘তাকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। কারণ তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর। সুস্থ হলে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ’
তিনি বলেন, শিশুদের ওপর নির্যাতন এক ধরনের বিকৃত মানসিকতা। মাদকাসক্তও বড় কারণ। তাছাড়া সামাজিক অবক্ষয়ও এর জন্য দায়ী। আর যেসব জায়গায় এধরনের ঘটনা ঘটছে সেখানে অভিভাবকরাও একটু কম সচেতন। এ বিষয়ে শিশুদের প্রতি আলাদা নজর দেওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৯
পিএম/এমএ