নাব্যতা সংকটের কারণে ভোলা-ঢাকা, ভোলা-বরিশাল ও ভোলা-লক্ষ্মীপুরসহ অন্তত ১০ রুটে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে নৌযান। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা।
কিছু পয়েন্টে ড্রেজিং করা হলেও বেশিরভাগ রুটের বেহাল দশা বলে জানিয়েছে লঞ্চ ও ফেরির শ্রমিক ও চালকরা।
তারা বলছেন, দ্রুত ড্রেজিং করা না হলেও অধিকাংশ নৌপথ হুমকির মুখে পড়বে।
জানা গেছে, ভোলার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র সহজ মাধ্যম নৌপথ। এখান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী লঞ্চে করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করেন। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীতে অসংখ্য ডুবোচর জেগে ওঠায় নৌযান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে যেতে পারছে না নৌযানগুলো।
বিশেষ করে ভোলা-ঢাকা, ভোলা-বরিশাল, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভোলা-মনপুরা ও লালমোহন কালাইয়া ও চরফ্যাশনের অভ্যন্তরীণ কুকরী-মুকরী এবং ঢালচরসহ অভ্যন্তরীণ রুটে বিড়ম্বনা। এসব পয়েন্টে যাতায়াতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২/৩ ঘণ্টা সময় বেশি লাগছে।
ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরির ইনচার্জ মো. ইমরান জানান, চ্যানেলের বেশ কিছু পয়েন্টে ডুবোচর জেগে ওঠায় ফেরি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এ চ্যানেলে ফেরি চলছে অনেকটা জোয়ারের ওপর নির্ভর করে।
লঞ্চ ও ফেরির মাস্টার ও সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডুবোচরের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই জোয়ার ভাটার ওপর নির্ভর করে চলতে হচ্ছে নৌযানগুলোকে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে এ অঞ্চলের নৌপথ। এ অবস্থায় নৌপথের রক্ষণাবেক্ষণ ও ড্রেজিংয়ের দাবি তোলেন ভুক্তভোগীরা। একই সঙ্গে বয়া ও মার্কার বাতি না থাকায় ঘন কুয়াশার সময়ে লঞ্চ চালাতে বিপাকে পড়তে হয় বলেও অভিযোগ তাদের।
কৃষ্ণচুড়া ফেরির মাস্টার রিয়াজুল হোসেন বলেন, নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এ কারণে গন্তব্যে যেতে অতিরিক্ত সময় লাগছে। তাই এ নৌপথে ড্রেজিং জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন লঞ্চঘাটের ব্যবসায়ী ও যাত্রীরা জানান, ডুবোচরে অনেক সময় আটকা পড়ে যায় নৌযান। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের অপেক্ষা করতে হয়। রুটগুলোতে নৌযান চলাচল বিঘ্ন হওয়ায় অনেকেই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে স্পিডবোটে করে যাতায়াত করছেন।
ভোলা-ঢাকা ও ভোলা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী একাধিক লঞ্চের মালিক গোলাম নবী আলমগীর বলেন, ডুবোচরের কারণে যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে, সঠিক সময়ে যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। শুধু তাই নয়, লঞ্চ চালাতে গিয়ে আমাদের পরিবহন খরচও অতিরিক্ত হচ্ছে। তাই রুটগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও ড্রেজিং জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে ভোলা নৌ-বন্দরের ট্রাফিক অফিসার (বিআইডব্লিউটিএ) মো. নাসিম আহমেদ বলেন, নৌপথে নাব্যতা রোধ করার জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথের দ্রুত ড্রেজিং করে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৯
আরএ