এতো ত্বরিত গতিতে বাইক উদ্ধারের পেছনে পুলিশের তৎপরতা বিস্মিত করেছে শাহনাজকে। এমনকি বাইক ফিরে পাওয়ার এ ঘটনাটিকে ‘অবিশ্বাস্য’ বলেই আখ্যায়িত করেছেন আবেগাপ্লুত শাহনাজ।
বাইক উদ্ধারের পেছনে প্রথমে গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ দেওয়ার পাশাপাশি ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুলিশকে। শাহনাজের মতে, পুলিশ চেষ্টা করলে সব পারে।
বুধবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। শাহনাজ বলেন, আমি অনেক খুশি। সর্বপ্রথম এজন্য সাংবাদিক ভাইদের ধন্যবাদ জানাই, দ্বিতীয়ত আইনের ভাইদেরকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশ যে এতো পরিশ্রম করে এতো কম সময়ে বাইকটা উদ্ধার করবে, সেটা আমার ভাবনার বাইরে ছিলো। আজ আবারো মনে হচ্ছে, পুলিশ চেষ্টা করলে সব পারে।
আমার কাছে মনে হলো ইন্ডিয়ান ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়ালের পুলিশদের মতো এদেশের পুলিশরা গেলো, বাইকটা উদ্ধার করলো আর নিয়ে এলো। আমাদের পুলিশদের সাধারণত এতো পরিশ্রম করারর কথা শোনা যায় না।
তিনি বলেন, চুরি হওয়ার পর থেকে পরিবার ও স্বজনরা বলেছে, ওটার আশা আর কইরো না। পুলিশ ওই বাইক বের করতে করতে চোর বিক্রি করে খেয়ে ফেলবে। বাইকটা উদ্ধার করে দিয়ে পুলিশ যে উপকাররা করলো তা বলে বোঝাতে পারব না।
পরিবারের মা-বাবা, দুই সন্তানের দায়িত্ব নিজের উপরই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বাইকটা আমার রিজিক। চোর বাইক চুরি করেনাই, আমার রিজিক চুরি করছে।
আমি সবসময় বলে আসছি আমি কারো সাহায্য চাই না। উপকার করতে চাইলে আমাকে একটা স্থায়ী চাকরি দেন’ যোগ করেন তিনি।
কাল বাইক চুরির পর থেকে হেলমেট মাথায় রেখেছেন, বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাইক চুরির পর থেকে এই হেলমেটই মনে হয়েছে আমার বাইক। তাই এটা আমি শুধু সঙ্গেই না, আমার রিজিক মাথায় রেখেছি। এ সময় শাহনাজকে উদ্ধার হওয়া বাইকটি হস্তান্তরের পাশাপাশি তেজগাঁও বিভাগের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা করা হয়। ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার শাহনাজের হাতে বাইকের চাবি ও আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।
এর আগে ডিসি বিপ্লব কুমার বাইক উদ্ধারের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, কয়েকদিন আগে পেশাগত আলাপের সূত্র ধরে জোবায়দুল ইসলাম জনির (২৭) সঙ্গে শাহনাজের পরিচয় হয়। স্থায়ী চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে কৌশলে বাইকটি ছিনিয়ে নেয় জনি।
আমরা রাতেই এ ঘটনায় একটি মামলা রুজু করি এবং তেজগাঁও জোনের এসি আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জনির নাম্বার ট্রেস করে তার বোনের নম্বর পেয়ে যাই। এরপর তার বোনের কাছ থেকে নারায়ণগঞ্জের একটা ঠিকানা পাই। সে অনুযায়ী রাতেই নারায়ণগঞ্জের রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে জনিকে গ্রেফতারসহ বাইকটি উদ্ধার করা হয়।
জনি নিজেকে অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিংয়ের রাইডার হিসেবে পরিচয় দিলেও তার আসল উদ্দেশ্য বাইক চুরি করা। সে আর কোনো চুরির সঙ্গে জড়িত কি-না তা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বিপ্লব বলেন, কোনো চুরিতেই পুলিশের আন্তরিকতার ঘাটতি থাকে না। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্লু পাওয়া যায় না। আমরা শতভাগ ক্ষেত্রেই সফল সেটিও বলছি না। তবে এ ক্ষেত্রে আসামির নম্বর পেয়ে যাওয়ায় আমরা কম সময়েই অনেকদূর এগিয়ে যেতে পেরেছি।
বাংলাদেশ সময় ১৪৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
পিএম/এএটি