ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পঞ্চগড়ে শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
পঞ্চগড়ে শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন  ঘন কুয়াশায় মোড়ানো রাস্তা। ছবি: বাংলানিউজ

পঞ্চগড়: দেশের সর্ব উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ে ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত ১৬ দিনে জেলায় তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে যায়নি। শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে পঞ্চগড়ে সকাল ৮টা পর্যন্ত ব্যস্ততম রাস্তাগুলো থাকছে জনশূন্য। 

দিনের বেলাও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। শীতের কারণে কর্মহীন ও খাদ্য সংকটে পড়েছেন জেলার সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ।

 

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে গত ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। এ মাসে দেশে দু’ থেকে তিনটি মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে, যার মধ্যে দু’টি তীব্র শৈত্যপ্রবাহের রুপ নিতে পারে।  

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে শীতের দাপটে দিনমজুররা ঘর থেকে সময় মত বের হতে পারেননি। ফলে একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। শীতবস্ত্রের পাশাপাশি এসব অভাবী মানুষের এই মুহূর্তে খাদ্য সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে সচেতন মহলের দাবি।  

দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় খড়-কূটা জ্বালিয়ে মানুষ শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে শহর-বাজারে লোকজনের আনাগোনাও কমে গেছে।  

আজগর আলী নামে এক চাষি বাংলানিউজকে জানান, শীতের সকালে মাঠে যেতে অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু কষ্ট হলেও করার কিছু নেই, পেটের জন্য তো কাজে যেতেই হবে।  

মাজেদুর রহমান নামে আরেকজন বাংলানিউজকে জানান, সকাল ৮টার সময় আমাদের কাজ শুরু করার কথা। কিন্তু শীত ও কুয়াশার কারণে সময় মত কাজে যেতে পারছি না।  

ঘন কুয়াশার মধ্যেও ক্ষেতে কাজ করছে কৃষক-কৃষাণি।  ছবি: বাংলানিউজপঞ্চগড় জেলা হিমালয় ছোঁয়া হওয়ায় এ জেলায় দিন দিন বেড়েই চলছে শীতের অনুভূতি। পাহাড়ি হিমেল হাওয়া ও শৈত্যপ্রবাহে গত ১ জানুয়ারি থেকে শীতের তীব্রতা অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে পঞ্চগড়ের শীর্তার্ত মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বির্পযস্ত করে তুলেছে। অসহনীয় এই অব্যাহত শীতে শিশু এবং বয়স্ক মানুষ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে। দেখা গেছে, ছিন্নমূল মানুষ শীতবস্ত্রের আশায় প্রতিদিন ধর্না দিচ্ছে প্রশাসনের দ্বারে।  

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার ৫টি উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়ন ৩টি পৌরসভায় প্রায় ৪০ হাজার কম্বলসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।  

আরো জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) পঞ্চগড়ে এসে পঞ্চগড়কে শীতপ্রবন জেলা বলে তাৎক্ষণিক ৫ লাখ টাকা ও ৫ হাজার শীতের কম্বল বরাদ্দ দেন।

এদিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বুধবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতবছর এই দিনে তাপমাত্র সর্বনিম্ন ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়স।  

এর আগে মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সন্ধ্যা ৬টায় রেকর্ড করা হয়েছিল ২২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়স বলে জানান এই কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।