ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘মহাসমুদ্রে’ আমি কাকে ধরবো?

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
‘মহাসমুদ্রে’ আমি কাকে ধরবো? দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দ্বিমত থাকলেও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তবে তিনি বলেছেন, রিপোর্ট দেওয়ার নামে ‘সুইপিং কমেন্টস’ (যাচ্ছেতাই মন্তব্য) করলেই হবে না। ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগারসহ (তথ্য-উপাত্ত) পরামর্শও দিতে হবে।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নিজ অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দুদক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

সকালে রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি জানায়, ২০১৮ সালে দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবনতি হয়েছে।

এখনকার অবস্থান ১৩তম।  

আগের দিন সোমবার (২৮ জানুয়ারি) ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিএফআই তাদের এক রিপোর্টে জানায়, কেবল ২০১৫ সালেই বাংলাদেশ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার ওপর পাচার হয়েছে। গত ১০ বছরে (২০০৬ থেকে ২০১৫) বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের অংক দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০৯ কোটি ডলার অর্থাৎ ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।  

টিআইবির প্রতিবেদনের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টিআইবিকে আমরা আগেও বলেছি, আপনারা কোন মেথোডলজি ইউজ (কর্মপদ্ধতি ব্যবহার) করেছেন, আমাদের জানান। নিশ্চয়ই তাদের কাছে অ্যানালিটিকস (বিশ্লেষণ) আছে। ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগার আছে। আমাদের কাছে এখনো প্রতিবেদনটা এসে পৌঁছায়নি। হাতে এলে আমরা তা দেখবো।  

ইকবাল মাহমুদ বলেন, গালভরা রিপোর্ট সবাই দিতে পারে। আপনাকে বলতে হবে কোন সরকারি কর্মকর্তা, কোন রাজনৈতিক নেতা দুর্নীতি করছেন। কারা কিভাবে কোথায় অর্থপাচার করছে। নইলে, এ মহাসমুদ্রে আমি কাকে ধরবো? কাকে খুঁজবো? আপনাদের রিপোর্টে যদি অ্যানালিটিকস না থাকে, ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগার না থাকে, তবে সে রিপোর্ট গ্রহণযোগ্য হবে না। রিপোর্ট দেওয়ার নামে সুইপিং কমেন্টস করলেই হবে না। ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগারসহ পরামর্শও দিতে হবে। তাদের সঙ্গেতো আমাদের সহযোগিতা আছে। তাই মুখের কথাতো গ্রহণ করা যায় না।

তিনি বলেন, দুদকের কাজ কী তা যদি কেউ শেখায়, তাহলেতো সমস্যা। আমাদের আইন আছে, তফসিলভুক্ত যে অপরাধ আছে, সে বিষয়ে আমরা কাজ করবো। তাছাড়া, এ কথাওতো সত্য সারাদেশের মানুষ দুর্নীতির ব্যাপারে সচেতন হয়েছে। টিআইবির রিপোর্ট দিয়ে কিছু হবে না। দুদক দিয়েও দুর্নীতি দমন হবে না। কেবল আমরা সবাই সচেতন হলেই দুর্নীতি দমন ও প্রশমন হবে। আর দেশে উন্নয়ন হয়েছে। কাজ হচ্ছে। টিআইবি এ কথা স্বীকার করে কি-না, তাও বলতে হবে।

দুদক স্বাধীন প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, আমি কখনো বলিনি, আমরা (দুদক) স্বাধীন নই। আমরা অ্যাবসুলেটলি (নিঃসন্দেহে) স্বাধীন। আমাদের কাজে কেউ বাধা দিয়েছে, তাও বলিনি। তবে হ্যাঁ, আমরা অনেক দুর্নীতিবাজকে আটক করতে পারিনি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। কেউ যদি লন্ডন গিয়ে পালিয়ে থাকে তাকে কিভাবে আটক করবো? সেদিন লুৎফর রহমান বাদলের সম্পত্তি ক্রোক (বাজেয়াপ্ত) করলাম। কিন্তু সে বিদেশে। তাকে ধরবো কিভাবে!

ইকবাল মাহমুদ বলেন, পার্লামেন্ট যে আইন করবে দুদকের কাছে তা শিরোধার্য। তা বাতিল বা সংশোধনের কোনো উদ্যোগ দুদক নেবে না। কারণ কোনো আইনই দুদকের ক্ষমতা খর্ব করতে পারে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
আরএম/এসএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।