মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) এর উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন আয়োজিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ধোঁয়াবিহীন তামাক কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানান বক্তারা।
ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, রাজস্বর আওতায় আনার জন্য অধিকাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানির সঠিক নিবন্ধনও খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে একদিকে রাষ্ট্র রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অপরদিকে কোনো জবাবদিহিতার আওতায় তাদের আনা সম্ভব হচ্ছে না।
তারা আরো বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য মতে তাদের কাছে মাত্র ২০টি ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যের তালিকা আছে, অথচ টোবাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল-টিসিআরসি সারাদেশে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে প্রায় ৫০০ ব্র্যান্ডের ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য পেয়েছে। সে তালিকা ইতিমধ্যেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হচ্ছে যে, এসব তামাক কোম্পানিগুলো দেশের কতটা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এসব কোম্পানিগুলোকে অনেক ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করা হচ্ছে এবং তা গণমাধ্যমগুলোতে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রের মূল কার্যক্রম পরিচালনায় ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যে করবৃদ্ধি সহায়ক হতে পারে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য কর অত্যাবশ্যকীয়। এটি টেকসই রাষ্ট্রের মূল কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তামাকের মতো স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যের ওপর কর আরোপ জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ সর্বোপরি রাষ্ট্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাকের কর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছাও একটি জরুরি বিষয়।
এ সময় বক্তারা সকল চর্বনযোগ্য তামাক কোম্পানিকে নির্দিষ্ট করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তালিকাভুক্ত করা এবং তাদের করের আওতায় আনা; কর ফাঁকি রোধে সমস্ত তামাক পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ও ব্যান্ডরোল নিশ্চিত করা; সকল ধোঁয়াহীন তামাক পণ্যে উচ্চহারে কর আরোপ করা; এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে তামাক পণ্য ব্যবহার না করার জন্য শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের উদ্বুদ্ধকরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ জানান।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান ও ডাব্লিউবিবি’র উপদেষ্টা আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কান্ট্রি অ্যাডভাইজার শফিকুল ইসলাম, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতির প্রকল্প পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারি হেলাল আহমেদ, টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিচার্স সেল-এর সদস্য সচিব বজলুর রহমান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
এইচএমএস/এমজেএফ