ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সৈয়দ আশরাফের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
সৈয়দ আশরাফের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের শোক প্রস্তাবে মোনাজাত ধরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যরা /ছবি- পিআইডি

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নিজের ভাইয়ের মতো দেখতেন বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ নেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, সৈয়দ আশরাফকে হারিয়ে আমাদের দল ও দেশের অনেক ক্ষতি হলো। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, আমার কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে, আসলে ওকে আমি ভাইয়ের মতো দেখতাম।

 

বুধবার (৩০ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের প্রধান অধিবেশনের প্রথম দিনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ওপর আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সৈয়দ আশরাফের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আবেগজড়িত কণ্ঠে কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে তার গলা ধরে যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেন, ‘আমার খুব কষ্ট হচ্ছে’।

শেখ হাসিনা বলেন, সৈয়দ আশরাফ অত্যন্ত সৎ ও মেধাবী রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। আমার পরিবারের সদস্যদের মতো ছিলো, আমাকে বড় বোনের মতো শ্রদ্ধা করতো। প্রতিটি ক্ষেত্রে সে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। রাজনৈতিক জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও অসাধারণ মেধাসম্পন্ন নেতা ছিলো সৈয়দ আশরাফ। পৃথিবীর যেকোনো রাজনৈতিক দর্শন ওর নখদর্পণে ছিলো। ভাবতেই পারিনি ও এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবে।

তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে বলিষ্ট ভূমিকা রেখেছিল সৈয়দ আশরাফ। আজ আমরা যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি সেক্ষেত্রে সৈয়দ আশরাফেরও বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিলো। অসম্ভব সহজ সরল ছিলো সে। ভাইদের হারিয়ে যে ক’জনকে ভাইয়ের মতো পেয়েছিলাম, সৈয়দ আশরাফ তাদের একজন। তার বাবা দেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন, সৈয়দ আশরাফও দীর্ঘদিন মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু সবসময় অসম্ভব সৎ জীবন-যাপন করেছে। ওর টাকা নেই, পয়সা নেই। কষ্ট করে চলতে হতো। তার চিকিৎসার জন্য যা যা করার আমি করেছি। তার মতো একজন প্রজ্ঞাবান ও জ্ঞানী রাজনীতিকের চলে যাওয়ার ক্ষতি কোনোদিন পূরণ হওয়ার নয়। তার মৃত্যু দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এবং দেশের জন্য চলে যাওয়া অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

কিশোরগঞ্জবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজ আশরাফের মতো একজন জ্ঞানী লোক, তাকে হারানো আমাদের দলের জন্য ও দেশের জন্য ক্ষতিকর। অসুস্থ অবস্থায় বিদেশে চিকিৎসায় থাকা অবস্থাতেই সৈয়দ আশরাফকে মনোনয়ন দেই। ওকে আমি বাদ দিতে পারিনি। ও বিদেশে চিকিৎসায় ছিলো কিন্তু প্রার্থী কেন নেই একটিবারের জন্যও তার এলাকার লোক প্রশ্ন করেনি। তাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছি। যেদিন আমরা শপথ নেই সেদিনই ওর মৃত্যুর খবর পেলাম। এটা অনেক কষ্টকর যে সৈয়দ আশরাফ শপথ নিতে পারলো না। ওর বোন ডা. লিপিকে উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছি। সৈয়দ আশরাফের স্মৃতি ধরে রাখতে ডা. লিপিকে ভোট দিয়ে কিশোরগঞ্জবাসী নির্বাচিত করবেন।

শোক প্রস্তাবের ওপর আরও আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এবং সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
এসকে/এসএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।