ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুমূর্ষু সন্তানকে বাঁচাতে মায়ের আকুতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
মুমূর্ষু সন্তানকে বাঁচাতে মায়ের আকুতি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: চোখের সামনে যন্ত্রণায় ছটফট করছে নাড়ি ছেঁড়া ধন। আর গর্ভধারিণী মা সেই সন্তানের সামনে বসে কাঁদছেন। এখন কান্নায় যেন তার একমাত্র সম্বল। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজিপাড়া দরগা মহল্লার মোবারক হোসেন ও আমেনা দম্পতির প্রথম সন্তান ইশরাক (১২)। জন্মের পর থেকেই সে ভুগছে মস্তিষ্কের জটিল রোগে।

চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে সহায় সম্পত্তি সব শেষ হলেও সন্তানের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। নিঃস্ব পরিবারটির পক্ষে এখন আর চিকিৎসা চালানো সম্ভব না হওয়ায় গত তিন সপ্তাহ ধরে ইশরাকের সঙ্গী শুধুই ঘরের বিছানা।

ইশরাকের ঘরে গিয়ে দেখা যায়, মায়ের কোলেও ঠিকমত বসতে পারছে না শিশু ইশরাক। মুখে খাবার নেওয়ার শক্তি না থাকায় তাকে খাবার দেওয়া হচ্ছে কৃত্রিম উপায়ে। মাঝে মধ্যে আংশিক চোখ খুলে তাকাতে পারলেও অধিকাংশ সময়ই থাকে অচেতন অবস্থায়। চোখের সামনেই সন্তানের যন্ত্রণায় ছটফট করা দেখেও পাষানের মত তাকে ফেলে রেখেছেন এক মা। কিইবা আর করার আছে এ মায়ের? অসহায়ত্ব যাকে আঁকড়ে ধরেছে।

ইশরাকের মা আমেনা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ১২ বছর আগে তাদের ঘর আলো করে আসে শিশু ইশরাক। জন্মের এক বছর বয়সেই চিকিৎসক জানায় তার মস্তিষ্কে পানি রয়েছে। একাধিকবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মস্তিষ্কের পানি অপসারণ করা হলেও তা স্থায়ী সমাধান হয়নি। ২০১২ সালে সর্বশেষ অস্ত্রোপচারে মস্তিষ্কের টিউমারের ৪০ শতাংশ অপসারণ করা গেলেও ৬০ শতাংশ থেকে যায়। এরপর বেশ কয়েক বছর সুস্থ থাকলেও গত ৩ সপ্তাহ আগে থেকে সে মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে।

তিনি বলেন, ভিটে মাটি ও জমি-জমা বিক্রি করে দীর্ঘদিন ছেলের চিকিৎসা করে আসছি। চিকিৎসা খরচ মেটাতে ও অসুস্থ সন্তানকে সারিয়ে তোলার আশায় তার বাবা দেড় বছর আগে পাড়ি দেন সৌদি আরব। কিন্তু আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) না থাকায় সেখানে সে কর্মহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তাই নতুন করে তাকে আর চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবারটি। অসহায় মায়ের আর্তনাদ, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছেন।

শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক সনৎ কুমার সিনহা বাংলানিউজকে বলেন, দিন দিন তার রোগটি মস্তিষ্কে অনেকটা ছড়িয়ে পড়েছে। দ্রুত উন্নত চিকিৎসা করলে এখনো শিশুটির জীবন বাঁচানো সম্ভব।

সবার সহযোগিতা বাঁচতে পারে শিশু ইশরাকের প্রাণ। যোগাযোগ: আমেনা বেগম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজিপাড়া দরগা মহল্লা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।