আহতাবস্থায় মাদ্রাসা শিক্ষক তারিকুল মাওলাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইমাম মিনহাজুল ইসলামকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনটি লেখার সময় আহত মাদ্রাসা শিক্ষক তারিকুল শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) হাতিয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
গত মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় হাতিয়ার দুর্গম চর ১ নম্বর হরণি ইউনিয়নের পূর্ব রসুলপুর গ্রামের ‘পুলিশের দোকান’ সংলগ্ন সাবের আহম্মদের মেয়ের বাল্যবিয়ে বন্ধের পর তারিকুল ও মিনহাজুলকে নির্যাতন করা হয়।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান শিকদার বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাতিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত কামাল উদ্দিনের ছেলে তারিকুল মাওলা বাংলানিউজকে জানান, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রত্যেক উপজেলায় দু’টি করে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা স্থাপন করেন। তার একটি হাতিয়ার প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের ১ নম্বর হরণি ইউনিয়নের পূর্ব রসুলপুরে স্থাপন করা হয়। দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসা নামে ওই মাদ্রাসায় তিনি শিক্ষকতা করেন। তার মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী পূর্ব রসুলপুর গ্রামের সাবের আহম্মদের মেয়ে নাজমা আক্তারের (১৩) সঙ্গে স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রির বিয়ের আয়োজন করা হয়।
বিষয়টি জানতে পেরে ওই দিন (২৯ জানুয়ারি) তিনি ন্যাশনাল হেল্পলাইন ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান। ইউএনও’র হস্তক্ষেপে মেয়েটির বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর সেদিনই বিকেলে তারিকুল মাওলা এবং স্থানীয় পূর্ব রসুলপুর জামে মসজিদের ইমাম মিনহাজুল ইসলাম একসঙ্গে হাতিয়া বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে পূর্ব রসুল গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে আবদুল কাদের, আবদুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ আলী মহব্বত, আবদুল জিলানীর ছেলে এনায়েত হোসেন বেচু, সমির উদ্দিন, বাবলু ও কালামসহ ১০-১২ জন তাদের ওপর হামলা চালায়।
একপর্যায়ে হামলাকারীরা তাদের ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে নিয়েই গাছের সঙ্গে বেঁধে তাদের নির্যাতন করে। এসময় তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও টর্চলাইটসহ নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক তিনটি স্ট্যাম্প ও দু’টি নীল কাগজে স্বাক্ষর নেয়। পরে আহতাবস্থায় স্থানীয়রা তারিকুলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম বলেন, বিষয়টি জেনে আমি মামলা করতে বলেছি। হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান শিকদার জানান, ওই শিক্ষক থানায় আসার পর তাকে লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলেছি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৯
আরএ