ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাহালামের কারাভোগ: ২০ কর্মদিবসে প্রতিবেদন দেবে কমিটি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৯
জাহালামের কারাভোগ: ২০ কর্মদিবসে প্রতিবেদন দেবে কমিটি জাহালম

ঢাকা: পাটকল শ্রমিক টাঙ্গাইলের জাহালমের কারাভোগ ও হয়রানির ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিটিকে আগামী ২০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 
 

এ বিষয়ে দুদক কমিশনার আমিনুল ইসলাম মঙ্গলবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলানিউজকে বলেন, জাহালমের অনুসন্ধানে কার গাফেলতি তা ২০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে কমিটিকে বলা হয়েছে।
 
এদিকে দুদক সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিনের সই করা এক আদেশে  বলা হয়, দুদকের করা ২০১২ সালে ৩৩টি মামলার মূল আসামি আবু সালেকের পরিবর্তে ভুলব্যক্তি জাহালমকে চার্জশিটভুক্ত ও কারাগারে অন্তরীণ থাকা সংক্রান্ত ঘটনায় তদন্তপূর্বক দায়-দায়িত্ব নিরুপণের জন্য কমিশনের পরিচালক (লিগ্যাল) আবুল হাসনাত  মো. আব্দুল ওয়াদুদের নেতৃত্বে এক সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাস্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

‘সুনির্দিষ্ট কার্যপরিধির আলোকে এই কমিটি আসামি আবু সালেকের পরিবর্তে জাহালমকে আসামি করার প্রেক্ষাপট,  এই ৩৩টি মামলায় অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়ে পদ্ধতিগত ত্রুটি বিচ্যুতিসহ সংশ্লিষ্টদের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ অন্যান্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা নির্ধারণ ও অভিযুক্তের শনাক্তকারীদের চিহ্নিত করবে। একই সঙ্গে তাদের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ, ঘটনাটি কমিশনের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর জাহালমকে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করতে বিলম্বের কারণ উদঘাটন করবে। ’

পড়ুন>> জাহালমের কারাভোগ, বহাল তবিয়তে মূলহোতা মর্তুজা

এতে আরো বলা হয়, ভবিষ্যতে এ জাতীয় ঘটনা রোধে অনুসন্ধান ও তদন্তের পদ্ধতিগত কী কী সংস্কার প্রয়োজন সে বিষয়ে সুপারিশসহ প্রতিবেদন কমিশনে পেশ করবে কমিটি। এই ঘটনা তদন্তকালে কমিটি যে কোনো পর্যায়ের যে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ও তদন্ত কার্যে সহায়তা গ্রহণ করতে পারবে।

এর আগে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ কমিটি গঠনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।  

যেভাবে মামলায় জাহালামের নাম

এদিকে প্রায় তিনবছর কারাভোগ করা জাহালমকে অর্থ আত্মসাৎ মামলায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা জাহালমকেই আবু সালেক হিসেবে চিহ্নিত করেন। এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ছবি দেখেই তাকে শনাক্ত করেন।  

এছাড়া  সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট শাখার মো. আবু সালেকের ব্যাংক হিসাব (নং ০০১০২০৯৭৪) খোলার ফরমে প্রথম যোগাযোগের নম্বর (০১৯২৯৩৩৪৭১৬) এবং দ্বিতীয় (নং ০১৭৪৯ ৬৮৫০৫১) দেওয়া আছে।
 
আবার একই ছবি ব্যবহার করে ব্রাক ব্যাংক লিমিটেডের এসএমই শাখায় মেহেরুন ছামাদ ট্রেডার্স, প্রো. গোলাম মর্তুজার নামে হিসাব খোলার ফরমেও একই মোবাইল নম্বর (০১৭৪৯ ৬৮৫০৫১) দেওয়া আছে। কাজেই রেকর্ডপত্রে দেখা যাচ্ছে মো. আবু ছালেকের সোনালী ব্যাংক মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট শাখা, ঢাকার হিসাব খোলার ফরমে যোগাযোগের দ্বিতীয় নম্বর (০১৭৪৯ ৬৮৫০৫১) এবং মেহেরুন ছামাদ ট্রেডার্সের হিসাব খোলার যোগাযোগের নম্বরও (০১৭৪৯ ৬৮৫০৫১) একই। দুই ক্ষেত্রে একই ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
 
এ বিষয়ে মোবাইলের সিমের নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান কাছে চিঠি দেওয়া হয়। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ০১৭৪৯ ৬৮৫০৫১  মোবাইল নম্বরটি মো. আবু সালেকের নামে নিবন্ধন করা। ওই জাতীয় পরিচয়পত্রে ‘জন্ম তারিখ ১/৫/১৯৮৩, পিতা: মো. আব্দুল ছালাম, ঠিকানা: গুনিপাড়া, সলিমাবাদ, নাগরপুর, টাঙ্গাইল’ উল্লেখ রয়েছে বলে জানান দুদক কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৯
আরএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।