শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টার সময় ডোঙ্গায় আখ ফেলে চলতি মৌসুমের এই আখ মাড়াই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল।
নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এফ এম জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য শিমুল বলেন, সরকার ভর্তুকি দিয়ে জনকল্যাণে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলে স্বাস্থ্যসম্মত চিনি উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
এই চিনিকলে সহস্রাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। এ এজন্য লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কৃষকদের উচিৎ চিনিকলে আখ সরবরাহ করা। বর্তমান সরকার নাটোরসহ রাষ্ট্রায়ত্ত সব চিনিকলে বহুমুখীকরণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন করা হবে। ফলে চিনিকলগুলো লাভজনক হয়ে উঠবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- নাটোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও জজ কোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম, সহ সভাপতি অধ্যাপক শামসুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মর্তুজা আলী বাবলু, চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. রুস্তম আলী প্রমুখ।
এর আগে ৩৬তম আখ মাড়াই মৌসুম সফল করতে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। কারখানার প্রয়োজনীয় মেরামতসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজ শেষ করা হয়।
মিলগেট ছাড়াও ৫১টি আখ ক্রয় কেন্দ্রের ক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কেন্দ্রের আঙিনা প্রস্তুত ও ডিজিটাল ওজন মেশিন সংযোজন করা হয়েছে। জমিতে আখের জরিপ কাজ শেষে উৎপাদিত আখের পরিমাণ বিবেচনা করে ই-পূর্জি ও ই-গেজেটের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে আখ ক্রয় করা হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কৃষকদের আখের মূল্য পরিশোধ করা হবে।
নাটোর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. মো. রুস্তম আলী বাংলানিউজকে জানান, চিনিকল এলাকার আখ চাষিদের প্রণোদনা দিতে পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। এই ঋণের টাকা পাঁচ হাজার ২৭৮ জন কৃষক তাদের জমিতে আখ উৎপাদনে বীজ ও সার সংগ্রহ করেছেন এবং জমিতে সেচ দিয়েছেন। চিনিকলে কৃষকদের বিক্রয়লব্ধ আখের মূল্য থেকে এ ঋণের টাকা সমন্বয় করা হবে।
নাটোর চিনিকল এলাকায় চলতি মৌসুমে ১৪ হাজার ১৫৩ একর জমিতে দুই লাখ ৫৪ হাজার টন আখ উৎপাদিত হয়েছে। চিনিকলের আটটি সাব-জোনের ৫১টি সেন্টারের অধীন কৃষকদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মানসম্পন্ন আখ চিনিকলে সরবরাহের জন্যে অনুরোধ জানিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
এছাড়া অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশারে গুড় উৎপাদনে আখ সরবরাহ না করার জন্যেও পোস্টার ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
২৭ জুলাই প্রকাশিত সরকারের প্রজ্ঞাপন এস আর ও নম্বর ২৫০-আইন/ ২০১৯ নাটোর চিনিকল এলাকায় ১ জুলাই ২০১৯ থেকে ৩১ মে ২০২০ পর্যন্ত পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই ও গুড় তৈরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
আরএ