ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সারাদিন লাগে পেনশনের টাকা তুলতে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
সারাদিন লাগে পেনশনের টাকা তুলতে!

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে পেনশনভোগীরা টাকা তুলতে এসে প্রায় সারাদিনই কাটিয়ে দিতে হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দা কিংবা সামনের গাছতলায় বসে। এভাবে প্রতিমাসেই চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় পেনশনভোগী গ্রাহকদের। চলমান অবস্থায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

এছাড়া পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা এবং টয়লেট না থাকায় চরম বিপাকেও পড়তে হয় তাদের। ফলে বৃদ্ধ বয়সী পেনশনভোগীরা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়তই।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সরেজমিনে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা যায়।

এসময় কথা হয় পেনশন নিতে আসা টাঙ্গাইল পৌরসভার বাজিতপুর এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার স্বামী পাবলিক হেলথে চাকরি করতেন। দীর্ঘদিন আগেই তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রেখে মারা যান। মৃত্যুর পর থেকেই স্বামীর পেনশনের টাকা তুলতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসি। বর্তমানে আমার বয়স ৮২ বছর।

পেনশনের টাকা নিতে এসে দুর্ভোগে বয়স্করা।

‘ইতোমধ্যে আমার শরীরেও নানা রকমের রোগ বাসা বেঁধেছে। বয়সের ভারে অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারি না। তবুও জীবনের প্রয়োজনে স্বামীর পেনশনের টাকা তুলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, জেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার পেনশনভোগী রয়েছে। তারাও একইভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা এবং টয়লেট সুবিধা না থাকায় অবর্ণনীয় কষ্টের শিকার হচ্ছেন তারা।

এদিকে, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কাগজপত্র ঠিক করে যেতে হয় ব্যাংকে। সেখানেও একই চিত্র। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে টাকা নিতে হয় পেনশনভোগীদের।

নাগরপুর থেকে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেনশনভোগী এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, মাঝে মাঝে সকাল সাড়ে আটটায় আসলে দেখা যায় অপেক্ষা করতে করতেই সন্ধ্যা হয়ে যায়। ওই সময় মনে হয় পেনশন দরকার নেই। তবুও জীবনের তাগিদে পেনশন তুলতেই হয়। তাই বাধ্য হয়েই দেরি হলেও অপেক্ষা করে টাকা নিয়ে তারপর বাড়ি ফিরি।

পেনশনের টাকা নিতে এসে দুর্ভোগে বয়স্করা।

তবে সরকার যদি এ নিয়ম পরিবর্তন করে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে আর এই দুর্ভোগ পোহাতে হতো না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি শাহানুর ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, পেনশনের টাকা তুলতে প্রবীণদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পুরনো পদ্ধতি বাদ দিয়ে যদি অনলাইন পদ্ধতি চালু করা হয়, তাহলে পেনশনভোগীদের জন্য সুবিধা হবে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, ইতোমধ্যে নতুন পেনশন গ্রহীতাদের টাকা তাদের নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে। যারা অনেক আগে পেনশনে চলে গেছে তাদের টাকাও নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
এসএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।