শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল থেকে পটুয়াখালী নদীবন্দর থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এজন্য পটুয়াখালী-ঢাকা, অভ্যন্তরীণসহ সব নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করে রাখা এমভি যুবরাজ, সাত্তার খান-৭ ও প্রিন্স আওলাদ-৭ ডাবল ডেকার লঞ্চের শ্রমিকরা টার্মিনালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এমভি যুবরাজ ডাবল ডেকার লঞ্চের মাস্টার জালাল উদ্দিন, সাত্তার খান লঞ্চের মাস্টার আ. মালেক ও প্রিন্স আওলাদ লঞ্চের মাস্টার মো. ইস্রাফিলসহ শ্রমিকরা।
ঢাকাগামী ডাবল ডেকার লঞ্চের একাধিক শ্রমিক ও মাস্টার বাংলানিউজকে বলেন, সবার প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ওয়েলফেয়ার ফান্ড আছে। কিন্তু আমাদের নৌযান শ্রমিকদের কোনো ফান্ড নেই। এছাড়া কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই মালিকপক্ষ আমাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করেন। শ্রমিকলীগ নেতারা অহেতুক আমাদের মারপিট করেন, যাদের আদৌ কোনো নৌযান শ্রমিক নেই। আমাদের ১১ দফা দাবিগুলো সরকার না মানা পর্যন্ত আমরা কাজে ফিরবো না।
১১ দফা দাবি হলো– ১. বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধ করা; ২. ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন দেওয়া; ৩. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্য ভাতা দেওয়া; ৪. সব নৌযান শ্রমিকের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ; ৫. এনড্রোস, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ; ৬. কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ; ৭. প্রত্যেক নৌশ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেওয়া; ৮. নদীর নাব্যতা রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন; ৯. মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিতরণ ও সনদ নবায়ন, বেআইনি নৌচলাচল বন্ধ করা; ১০. নৌপরিবহন অধিদফতরে সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ এবং ১১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ জাহাজ শ্রমিক ফেডারেশনের ১৪ দফা ও নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দিনগত রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দেন নৌযান শ্রমিকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
এসআরএস