এদিন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জগজিৎ সিং অরোরা শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে এক সংবর্ধনা সভায় শেরপুরকে মুক্ত বলে ঘোষণা দেন। এ সময় মুক্ত শেরপুরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এসময় ‘জয়বাংলা’ স্লোগানে উপস্থিত জনতা চারদিক মুখরিত করে তোলে। এখানে দাঁড়িয়েই তিনি বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা, মস্কো, আকাশবানিসহ বিভিন্ন বেতার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ঢাকা মুক্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এ দিনটি শেরপুর জেলার আপামর জনসাধারণের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যময়, গৌরবোজ্জ্বল ও অবিস্মরণীয় দিন।
মুক্তিযুদ্ধে শেরপুর ছিল ১১ নম্বর সেক্টরের অধীনে। স্বাধীনতাযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাসে বর্তমান শেরপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৩০ থেকে ৪০টি খণ্ডযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। এসব যুদ্ধে পাক হানাদারদের নির্মমতার শিকার হয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে ১৮৭ জন, শেরপুর সদর উপজেলার সূর্যদী গ্রামে এক মুক্তিযোদ্ধাসহ ৬৯ জন, ঝিনাইগাতী উপজেলার জগৎপুর গ্রামে ৬১ জন মুক্তিকামী মানুষ শহীদ হন।
জামালপুরের কামালপুর দুর্গ দখলমুক্ত হওয়ার প্রায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকবাহিনীর সব ক্যাম্প ধ্বংস হয়ে যায়। শেরপুরের আহম্মদনগরের পাক ক্যাম্প থেকেও পিছু হটতে থাকে পাক সেনারা।
অবশেষে পাক সেনারা ৬ ডিসেম্বর রাতের আধারে শেরপুর শহরের ওপর দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে জামালপুর পিটিআই ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। পরদিন ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় শেরপুর।
স্বাধীনতা যুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য জেলার একজন বীর বীরবিক্রম, দুইজন বীর প্রতীক উপাধি পেয়েছেন। তারা হলেন- ‘শহীদ শাহ মু'তাসীম বিল্লাহ খুররম বীর বিক্রম’, ‘কমান্ডার জহুরুল হক মুন্সি বীর প্রতীক বার’ ও ‘ডা. মাহমুদুর রহমান বীর প্রতীক’। এ তিন বীর সন্তানই শ্রীবরদী উপজেলার বাসিন্দা।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
ওএইচ/