ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অবক্ষয় রোধে জীবন ঘনিষ্ঠ সুস্থ সিনেমা নির্মাণ করুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৯
অবক্ষয় রোধে জীবন ঘনিষ্ঠ সুস্থ সিনেমা নির্মাণ করুন

ঢাকা: মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিসহ সামাজিক অবক্ষয় রোধে জীবন ঘনিষ্ঠ সুস্থ চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের বিজয়ীদের হাতে চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানজনক পদক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে নির্মাতাদের প্রতি এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি জীবন ঘনিষ্ঠ চলচ্চিত্র যত বেশি নির্মাণ করা যাবে, আমাদের সেটা তত বেশি মঙ্গলজনক হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান যুগে আপনারা জানেন এ যে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি আমাদের সমাজকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধুমাত্র আইনগত অভিযান দিয়েই সমাজকে এখান থেকে রক্ষা করা যাবে না। এর জন্য দরকার মানুষের ভেতরের চেতনাটাকে আরও উদ্ভাসিত করা। এর খারাপ দিকটা তুলে ধরা এবং ভালো কিছু মানুষের সামনে উপস্থাপন করা। চলচ্চিত্র এখানে বিরাট একটা ভূমিকা রাখতে পারে। কাজেই সেদিকে আপনারা আরও বেশি নজর দেবেন। ’

আরও পড়ুন
** বিজয়ীদের হাতে চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিল্পকলার সবগুলো মাধ্যমের সমন্বয়ে চলচ্চিত্র। সবচেয়ে শক্তিশালী গণমাধ্যম। এ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষের চিন্তা-চেতনা, মননে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। ’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের মধ্যে গভীর দাগ কাটতে পারে এবং মানুষকে আরও সুন্দর পথে চলার প্রেরণা দিতে পারে এ চলচ্চিত্র। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজের কাছে কোনো বার্তা পৌঁছাতে হলে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সবচেয়ে সহজে পৌঁছানো যায়। এটা যেমন একটা সমাজকে সংস্কার করতে পারে, কুলশমুক্ত করতে পারে, আবার কখনো কখনো অপসংস্কৃতি একটা সমাজকে নষ্ট করতে পারে। কাজেই সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়ে আমাদের চলতে হবে। ’

চলচ্চিত্রে অসুস্থ ধারার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর আমাদের সাংস্কৃতিক জগতেও অপসংস্কৃতির প্রচলনটা খুব দেখতে পেলাম। এমনকি এমন এক জায়গা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যে পরিবার-পরিজন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার সেই পরিবেশটাও ছিল না। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিন্তু সেই অশুভ জায়গা থেকে বেরিয়ে এসেছি। এখন অনেক বেশি সমাজ সংস্কারমূলক, আবেদনমূলক চলচ্চিত্র হচ্ছে, যার জন্য মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। ’

অশ্লীল চলচ্চিত্র বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেন্সর সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতি সঠিকভাবে প্রতিপালনের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সেন্সর কার্যক্রম পরিচালনা, পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার ও টাস্কফোর্স গঠন করার মাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্পকে অপসংস্কৃতি, অশ্লীলতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় থেকে রক্ষা করার কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ’

জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সিনেমা হলগুলো ডিজিটালাইজেশনে সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখন যেটা করতে হবে সব জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মানুষের আস্তে আস্তে ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে, আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ছে, বিনোদনের ব্যবস্থা যাতে ভালোভাবে হয় সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘মফস্বলের সিনেমা হলগুলো যাতে ভালোভাবে চলতে পারে এবং ডিজিটালাইজড যাতে হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। অর্থাৎ আধুনিক যুগের সঙ্গে তারা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে। এক্ষেত্রে যা যা সহযোগিতা দরকার সেটা আমরা করতে পারবো। ’

চলচ্চিত্র সেক্টরের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান থেকে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের বিজয়ীদের হাতে চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানজনক পদক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসান, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য সচিব আবদুল মালেক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯
এমইউএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।