মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজিত উগ্রবাদবিরোধী জাতীয় সম্মেলনের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ বিষয়টি উল্লেখ করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এবং ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
আইজিপি বলেন, ২০১৬ সালে হলি আর্টিজানে হামলা পরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে বেশকিছু অভিযান হয়েছে।
বাইরে জঙ্গিদের চিহ্নিত করা, গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং কারাগারে পাঠাতে যতটা কাজ হচ্ছে, কিন্তু কারাগারে ডি-রেডিকালাইজেশনের ব্যাপারে আমরা ততটা সচেতন নই। এই জায়গায় আমাদের কিছু কাজ করতে হবে। আমি এ সম্মেলনে এ ধরনের কোনো এনজিও দেখলাম না যারা কারাগারে আসামিদের সংশোধনের বা ডি-রেডিকালাইজেশনে কাজ করে। কারাগারের এই আসামিদেরকে ডি-রেডিকালাইজড করার জন্য প্রোগ্রাম নিতে হবে।
‘জঙ্গিরা যারা কারাগার থেকে ফিরে আসছে তাদের পুনর্বাসনের একটি পরিকল্পনা করতে হবে আমাদের। তারা আমাদেরই সমাজের সন্তান, তাদের মূল সমাজে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা থাকতে হবে’।
তিনি বলেন, প্রিভেনশন ইজ অলওয়েজ বেটার দ্যান কিওর। এই লক্ষ্য সামনে নিয়ে জঙ্গিবাদের বিস্তার বন্ধে আমাদের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজ করছে।
এছাড়াও জঙ্গিবাদ নির্মূলে মোটিভেশনাল কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে এই কাজটি সবচেয়ে বেশি কার্যকরভাবে করেন ধর্মীয় নেতারা। তাদের বাণী মানুষ খুব সহজে গ্রহণ করেন। আমরা এরইমধ্যে বিভিন্ন বাংলাদেশের মসজিদগুলোর ইমামদেরকে মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রচার করতে বলেছি। এর ফলে যাদের জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, তারা ধর্মের সুষ্ঠু ব্যাখ্যা পেয়ে আর এ পথে ঝুঁকবেন না।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের যদি আরেকটি হলি আর্টিজানের মতো ঘটনা ঘটতো তাহলে আমাদের সব উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যেতো। মেট্রোরেল, পদ্মাসেতুর, রূপপুরের প্রজেক্টের বিদেশি এক্সপার্টদের ধরে রাখা যেতো না। তবে আমরা এ ধরনের কোনো ঘটনা হতে দেইনি।
তিনি বলেন, আমি যখন অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান ছিলাম তখন দেখেছি উগ্রবাদের সঙ্গে জড়িত ৯০ শতাংশ আহলে হাদিস সম্প্রদায়ের। আমরা এদের সঙ্গে কথা বলেছি, এদের অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা বলেছে, তারা শুধুমাত্র তাদের সম্প্রদায়ের বড় হুজুরের কথা শুনবে ও মানবে। আলেমদের একাংশকেও তারা ‘কাফের’ বলে মনে করেন। তাই উগ্রবাদ রুখতে ধর্মীয় নেতাদের বড় একটি ভূমিকা পালন করতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, আমরা একটা জায়গায় পিছিয়ে রয়েছি। যেসব জঙ্গিদের ধরেরে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে তাদের ডি-রেডিকালাইজেশন প্রক্রিয়ায় ঘাটতি রয়েছে। তারা কারাগারে গিয়েও সংশোধন হতে পারছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
পিএম/জেডএস