জুলুম, নির্যাতন ও গণহত্যার বিচার পাওয়ার আশায় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের উখিয়ায় মোনাজাতসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে রোহিঙ্গারা। তবে প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় এবার অনেকটা অনাড়ম্বরভাবেই অনুষ্ঠান শেষ করতে হয়েছে তাদের।
রোহিঙ্গা নেতা ছৈয়দ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৬২ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও মগরা। ধারাবাহিকভাবে নির্যাতনের দীর্ঘ কয়েক যুগ পর এবার আন্তজার্তিকভাবে স্বীকৃত কোনো আদালতে বিচার শুরু হয়েছে। তাই এ মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় মসজিদে মসজিদে মোনাজাত করা হয়েছে। মোনাজাতে গাম্বিয়া ও বাংলাদেশের সমৃদ্ধিও কামনা করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের গণহত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গত নভেম্বরে মামলাটি করেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে এই মামলার শুনানি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর)। ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ শুনানি চলবে। গাম্বিয়া ও মিয়ানমার ছাড়াও শুনানি পর্যবেক্ষণে হেগ শহরে গেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।
এদিকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ন্যায়বিচার পাওয়ায় আশাবাদী রোহিঙ্গারাও। উখিয়ার কুতুপালং সাত নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা মো. আলী বাংলানিউজকে বলেন, বছরের পর বছর জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। বিচার শুরু হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। আশা করছি, ন্যায়বিচার পাবো।
বালুখালী ১২ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মো. ইদ্রিস বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৬২ সাল থেকে মিয়ানমার আমাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। আমাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, মা-বোনকে হত্যা করেছে, জায়গা-জমি কেড়ে নিয়েছে, আমাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে। আজ সেই বিচার শুরু হয়েছে, আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন ন্যায়বিচার পাই।
রোহিঙ্গা নেতা এহেসানুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিচার শুরু হওয়ায় আমরা খুশি। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, বিচার যেন সুন্দরভাবে হয়। আর মামলার জন্য আমাদের কাছে যদি ডকুমেন্ট চায়, তা দেওয়ার জন্যও আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল মনসুর বাংলানিউজকে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোনো ধরনের কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাদের কর্মসূচি পালনের তেমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
এসবি/একে