কথা প্রসঙ্গে আব্দুর রহমান বলেন, বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ট্রাক্টরগুলো জমিতে ব্যবহার হয়। বাকি সময়ে মালামাল টানার কাজ করি।
এগ্রিকালচারাল ট্রাক্টর এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার ট্রাক্টর কার্যকরভাবে চালু রয়েছে। তবে চলতি বছরে ট্রাক্টর নিয়ে উত্তরাঞ্চলে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই চলতে দেওয়া হচ্ছে না ট্রাক্টর। ট্রাক্টর পুড়িয়ে দেয়া, তেল নিতে গেলে সড়কে আটকে দেয়া হচ্ছে। এতে ট্রাক্টর বিক্রি বন্ধ থাকলে সরকারের যান্ত্রিকীকরণে চলমান ভর্তূতি কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হবে।
এ্যাসোসিয়েশনের মতে, এক বছরের মধ্যে ট্রাক্টরগুলোকে লাইসেন্সের আওতায় আনা যেতে পারে। কিভাবে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষকদের আরো সহজ শর্তে এবং স্বল্প সুদে ঋণ দিতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।
গাইবান্ধার গোবিন্ধগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাক্টরগুলো মূলত কৃষি কাজের জন্য আমদানি করা হয়। এখন সেগুলো পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ করে বালু উত্তোলনের কাজে বেশি ব্যবহৃত হয়। আমরা কৃষকদের মানবিক দিকগুলো বিবেচনা করেছি। তাদের এটাও বলা হয়েছে, বালু উত্তোলন ছাড়া অন্য কাজে ব্যবহার করলে আইন কিছুটা শিথিল করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আমরা ইতোমধ্যে অনেকগুলো ট্রাক্টর ধ্বংস করেছি। যেহেতু কৃষকরা ট্রাক্টরগুলো ঋণ নিয়ে কিনে থাকেন সেহেতু আমরাও চাই কৃষকরা ট্রাক্টরগুলো ব্যবহার করে তাদের পরিবার চালাক, ঋণ থেকেও মুক্ত হোক। সেই দিক বিবেচনা করেই আমরা আইন প্রয়োগ করছি।
দেশের বাজারে ট্রাক্টর সংযোজন, আমদানি ও বিপণন করছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে দি মেটাল প্রাইভেট লিমিটেডের ট্যাফে, এসিআই মোটরসের সোনালিকা, র্যানকন ও কর্ণফূলী লিমিটেডের মাহিন্দ্র, মেটাল প্লাসের আইসার, পারফরমেন্স মোটরসের স্বরাজ, গেটকোর নিউ হল্যান্ড, ইফাদ অটোসের এসকর্ট ও এনার্জিপ্যাকের জন ডিয়ার ব্রান্ডের ট্রাক্টর বাজারে রয়েছে।
দি মেটাল প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাদিদ জামিল বলেন, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রাক্টর বিক্রির উপযুক্ত সময়। সারাদেশেই এখন নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। উত্তরবঙ্গে কৃষকের সঙ্গে চলমান ঘটনায় এক ধরনের ভিতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ট্রাক্টর চালানোর ক্ষেত্রে জটিলতা থাকলে তা সময় দিয়ে দ্রুত সমাধান করতে হবে। চালকদের লাইসেন্স এবং গাড়ীগুলোকে রেজিষ্ট্রেশন করার সুযোগ দিতে হবে। তা না হলে কৃষকের মনে আস্থাহীনতা তৈরি হবে। এতে যান্ত্রিকীকরণ বাধাগ্রস্থ হতে পারে। কৃষি খাত বিপাকে পড়তে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনও শতভাগ যান্ত্রিকীকরণের আওতায় আসেনি জমি চাষ। তাই চাষাবাদে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো ও মাটির গুনাগুন এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ট্রাক্টর। তাছাড়া শ্রমিক সংকট মেটাতেও কার্যকর ভূমিকা রয়েছে যন্ত্রটি। জমি তৈরি ছাড়াও কৃষি পণ্য পরিবহন ও বহুমূখী ব্যবহারে কৃষকের আয়ের অন্যতম উৎস হতে পারে ট্রাক্টর। কিন্তু কৃষকের এ ধরনের আতঙ্কে ট্রাক্টর ব্যবহার অকেনটাই বন্ধের উপক্রম।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএমএস