মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে শুরু হবে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু সড়কের সাধু পৌলের গির্জা ও সিরাজউদ্দৌলা সড়কের ব্যাপ্টিস্ট গির্জাকে সাজানো হচ্ছে বর্ণিল সাজে।
সকালে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের সাধু পৌলের গির্জা ঘুরে দেখা গেছে, উৎসবকে ঘিরে সাজসজ্জায় ব্যস্ত রয়েছেন সেখানকার দায়িত্বরত সবাই। ইতোমধ্যে সাজানো হয়েছে গোশালা ও ক্রিসমাস ট্রি, করা হয়েছে রঙ, প্রধান ফটকের বাইরে তৈরি হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তোরণ, প্রার্থনা কক্ষও সাজানো হয়েছে নানা সাজে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর ছাড়াও ফতুল্লার সস্তাপুর, পাগলা, দেলপাড়া, বন্দরের লক্ষ্মণখোলা, সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড, সদর থানার গোগনগর এলাকায় খ্রিস্টানদের বাস। তাদের বেশির ভাগই চাকুরিজীবী। বিশেষ করে গার্মেন্টস, বায়িং হাউস, চায়নিজ রেস্টুরেন্ট ও বিউটি পার্লারে কর্মরত। নারায়ণগঞ্জে ক্যাথলিক ও ব্যাপ্টিস্ট ছাড়াও খ্রিস্টানদের কয়েকটি ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের লোকও রয়েছে। তাদের জন্য নারায়ণগঞ্জে কোনো গির্জা নেই। তারা বাসায়, অফিসে অথবা চায়নিজ রেস্টুরেন্টে বড়দিন উপলক্ষে অস্থায়ী গির্জা তৈরি ও ক্রিসমাস-ট্রি সাজিয়ে থাকে।
সাধু পৌলের গির্জার সাধারণ সম্পাদক পিন্টু পলিকাপ পিউরিফিকেশন বলেন, ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশন থেকে আমাদের রঙয়ের কাজ করে দেওয়া হয়েছে। আজ (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে আমাদের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। বড়দিনের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় প্রার্থনা হবে, সাড়ে ১০টায় আমরা অতিথিদের নিয়ে কেক কাটবো। মূলত সকালে প্রার্থনা অনুষ্ঠানের পর সবাই বাইরে উৎসব করে, আমাদের এখানে পর্যাপ্ত জায়গা নেই বলে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টগুলো সাজিয়ে নানা আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দুটি গোত্রের (ক্যাথলিক ও ব্যাপ্টিস্ট) জন্য নারায়ণগঞ্জ শহরে দুটি গির্জা রয়েছে। ক্যাথলিকদের জন্য শহরের ১৩৫, বঙ্গবন্ধু সড়কে সাধু পৌলের গির্জা ও ব্যাপ্টিস্টদের জন্য সিরাজউদ্দৌলা সড়কে ব্যাপ্টিস্ট গির্জা। ব্যাপ্টিস্ট গির্জাটি ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে রেভারেন্ড রামচরণ ঘোষের নাম বিশেষভাবে উল্লেযোগ্য। অন্যদিকে ১৯৪৯ সালে ইতালিয়ান ফাদার জন সাধু পৌলের গির্জাটি প্রতিষ্ঠা করেন।
ব্যাপ্টিস্ট গির্জার সম্পাদক অরবিন্দ হালদার জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে গির্জায় আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে । দুপুর ১টায় কেক কাটার মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি হবে।
নাসিকের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলার দুটি গির্জাই আমার ওয়ার্ডে অবস্থিত। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতি বছরের মত আলোকসজ্জা ও রঙয়ের কাজ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুটি শুভেচ্ছা তোরণ তৈরি করে দেয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআইও ২) শফিউল আজম জানান, ইতোমধ্যে দুটি গির্জায় নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে সাদা পোশাকে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিও। বড়দিনকে ঘিরে পুরো শহরেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে শহরের আলাদা পাঁচটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
এছাড়া উৎসবকে শান্তিপূর্ণ করতে জেলা পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯
এবি