ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘মাহবুব তালুকদারের পদত্যাগ করে কথা বলা প্রয়োজন ছিল’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
‘মাহবুব তালুকদারের পদত্যাগ করে কথা বলা প্রয়োজন ছিল’ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যে কথা বলেছেন তা স্বপদে থেকে বললে আত্মপ্রবঞ্চনা হয়। তাই কথাগুলো বলার আগে পদত্যাগ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। 

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন- গত নির্বাচন সুষ্ঠু বা ভালো হয়নি, এজন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার চেয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাহবুব তালুকদারের বক্তব্য টেলিভিশনে শুনেছি। আজকের কাগজেও আছে। মাহবুব তালুকদার সাহেব যে কথাগুলো বলেছেন, আমি মনে করি এগুলো পদত্যাগ করেই বলা প্রয়োজন। কারণ তিনি তার ব্যর্থতার কথা বা যেসব কথা বলেছেন, স্বপদে থেকে বললে আত্মপ্রবঞ্চনা হয়।  

তিনি বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার ও নির্বাচন কমিশন- এগুলো আমাদের দাবির প্রেক্ষিতেই অনেক সংস্কার হয়েছে। দেশে আজ যে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা, তা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দাবি ছিল। এই দাবির প্রেক্ষিতে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়াতেও অনেক সংস্কার হয়েছে।  

হাছান মাহমুদ বলেন, একসময় আমাদের দেশে হাত তুলে ভোট দেওয়া হতো। পরে সে ভোট ব্যালট পেপারের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে, এখন তা হচ্ছে ইভিএম পদ্ধতিতে। সুতরাং নির্বাচন একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেটি যুগের প্রয়োজনে, সময়ের প্রয়োজনে যেকোনো সময় হতে পারে।  

মাহবুব তালুকদারের দ্বিমতের কারণে নির্বাচন কমিশনের স্বাভাবিক অবস্থা ব্যাহত হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি না এতে নির্বাচন কমিশনের স্বাভাবিক অবস্থা ব্যাহত বা নষ্ট হবে। তবে তিনি বিভিন্ন সময় এ ধরনের কথা বলে আলোচনায় থেকেছেন।  

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না জেনেও প্রার্থী ঘোষণা করবো ও নির্বাচনে অংশ নেবো। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত, বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। বাংলাদেশে অতীতে যেসব নির্বাচন হয়েছে সেগুলো সুষ্ঠু ও অবাধ হয়েছে। আমরা সরকার গঠন করার পর যেসব সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে, সেগুলোও অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। সেগুলো যদি সুষ্ঠু না হতো তাহলে আমরা বেশ কয়েকটি সিটি নির্বাচনে পরাজিত হলাম কীভাবে? বিএনপি অনেকক্ষেত্রে জয়ী হয়েছে। এখনো সুষ্ঠু-অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আমার বিশ্বাস। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করছে। সুতরাং বিএনপির যে অভিযোগ, এগুলো বরাবরের অভিযোগ, গৎবাঁধা অভিযোগ। নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।  

তিনি বলেন, বিএনপি তো গত নির্বাচনের আগে থেকেই আন্দোলনের মধ্যে আছে। বেগম খালেদা জিয়া যে ২০১৪ সালে অবরোধ করেছিলেন, সে অবরোধ কিন্তু এখনো প্রত্যাহার করেনি। তাদের আন্দোলনের নমুনা দেখেছি, শক্তি ও সামর্থ্যের কথা জনগণ জানে। সুতরাং এ ধরনের ফাঁকা আওয়াজ তারা সবসময় করে আসছে। এটিও ফাঁকা আওয়াজ ছাড়া কিছু না।  

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৩০ তারিখ কালোদিবস পালনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবে- এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল ও তাদের অনেকেই জয়ী হয়েছে এবং তারা এমপি হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন। সুতরাং যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, সেই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে নিজের বিবেকের সঙ্গেই প্রতারণা। ৩০ ডিসেম্বর যদি নির্বাচন না হতো, তাহলে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকতো না। সেই নির্বাচন গণতন্ত্রের যাত্রাকে সংহত করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯ 
জিসিজি/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।