মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের তারাবাড়ি এলাকার মেসার্স মারুফা ও তাসফিয়া ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই ইটভাটায় কাজে এসেছে শিশু হাবিবুর। এখানে ইটভাটার গরম চুল্লি থেকে ভ্যানে করে বাইরে বের করে ও সেই ইট স্টকে সাজানোর কাজ করছে সে।
শিশু হাবিবুর বাংলানিউজকে জানায়, আমার স্কুল বন্ধ তাই বাবা-মায়ের সঙ্গে ইটভাটায় কাজে এসেছি। প্রত্যেক দিন কাজ করলে ২০০ টাকা দেয় আমারে। আর বড় মানুষ-গো আরও বেশি টাকা দেয়। আমি বড় হয়ে একদিন ডাক্তার হবো। তহন আমার বাবা-মায়েরে কোনো কাজ করতে দিমু না।
শিশু শ্রমিক হাবিবুরের বাবা হযরত আলী বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভাটায় কাজ করতে এসেছি খুলনার ডুমরিয়া এলাকা থেকে। আমি ও আমার স্ত্রীসহ ১২ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে এসেছি ভাটায় কাজ করতে। ইটভাটার চুল্লি থেকে পোড়া ইট বের করে সাজানোর কাজ আমরাও করছি। এর পাশাপাশি আমার ছেলেও সেই কাজ করছে। একটু ঝুঁকি হলেও কিছু করা নাই। কারণ গরীবের সব কাজই ঝুঁকির।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভাটা শ্রমিক বাংলানিউজকে জানায়, এই ইটভাটায় সরকারি কোনো নিয়ম নীতির দিকে না তাকিয়ে ক্ষমতার দাপটে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো কাজ করে। কোনো প্রতিবাদ করলে স্থানীয় নেতাদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখায়, যে কারণে কোনো শ্রমিক কোনো প্রতিবাদ না করে মুখবুজে কাজ করে।
মেসার্স মারুফা ও তাসফিয়া ব্রিক্সের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমার ইটভাটায় কোনো শিশু শ্রমিক কাজ করে না। যদি কোনো শিশু কাজ করে তবে তাদের বাবা-মায়েদের কাজে সাহায্য করে।
মানিকগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দিপক কুমার ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও ধুলাবালিতে শিশুদের নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এছাড়া শিশু শ্রম আইনানুগভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। যে সব ইটভাটার মালিক এই অপ্রাপ্ত বয়সে শিশু শ্রমিক দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
সাটুরিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২০
এনটি