বুধবার (১ জানুয়ারি) সারাদেশের মতোই পাবনাতেও বই উৎসব শুরু হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য নির্ধারিত এ বই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) অভিযোগ পাওয়া পাবনা পৌর এলাকার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল প্রাঙ্গনে আলাদা টেবিল চেয়ারে ভর্তির টাকা গ্রহণ করে শিক্ষর্থীদের দেওয়া হচ্ছে নতুন বইয়ের রশিদ। প্রতিষ্ঠানে ভর্তির টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে দেওয়া হয়নি নতুন বই।
পাবনা শহরের দীলালপুর কফিলউদ্দিন পাড়ায় অবস্থিত শাহীন ক্যাডেট স্কুল ও শহরের অনন্ত বাজার এলাকার রাঘবপুর মহল্লায় অবস্থিত ইমাম গাজ্জালী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তির টাকার রশিদ ছাড়া দেওয়া হচ্ছে না নতুন বই।
১ জানুয়ারি এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বই উৎসব পালন করলেও যেসকল শিক্ষার্থীরা নিচের ক্লাস থেকে উপরের ক্লাসের ভর্তির টাকা জমা দিয়েছে শুধু তাদেরকেই বই দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
ভর্তি হওয়া স্কুলের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা যারা স্কুলে ভর্তি হয়েছি তাদেরকে বই দিয়েছে। আর যারা এখনো পরের ক্লাসের টাকা জমা দেয়নি তাদেরকে বই দেয়া হয়নি বলে জানান তারা।
তবে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের এ অভিযোগ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন শাহীন ক্যাডেট স্কুলের দায়িত্বরত শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম। আর অপর স্কুল ইমাম গাজ্জালী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দায়িত্বরত সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আয়ুব হোসাইন খান ঘটনা অস্বীকার করেন বলেন, আমরা স্কুলে উপস্থিত সবাইকে বই দিয়েছি। বই পায়নি এ কথাটি সত্য নয়।
এদিকে এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের চাহিদা অনুসারে প্রতিটি ক্লাসের পরিপূর্ন বই সরবরাহ করেছে সংশ্লিষ্ঠ শিক্ষা অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির পাবনা জেলার সভাপতি নওশের আলী বলেন, অবশ্যই বিষয়টি খারাপ হয়েছে। সরকারর ভালো কাজকে নষ্ট করার জন্য কতিপয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক এ কাজ করছে। এ ঘটনা যদি সত্য হয়ে থাকে তা হলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার বিষয়ে পাবনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম মোসলেম উদ্দিন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা টাকা বা ভর্তির রশিদ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বই দেয়নি তারা অন্যায় করেছেন। ভর্তি বা কোনো অর্থের সঙ্গে নতুন বই দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। যে সব প্রতিষ্ঠান এ অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাবনা জেলার নয়টি উপজেলার সাত লাখ ৭০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৫ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৫ নতুন বই এবং মাধ্যমিক শাখায় (ভোকেশনাল ও মাদ্রাসাসহ) তিন লাখ ৫৩ হাজার ৯৬০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৫ টি নতুন বই দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২০
এবি