শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সন্যাসী রাণী। চারঘাট কেন্দ্রীয় শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
শেষবারের মতো তাকে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন- রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রায়হানুল হক, সাবেক পৌর-মেয়র নার্গিস খাতুন, চারঘাট সোয়ালোজের পরিচালক মাহমুদা বেগম গিনিসহ স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিরা।
পঞ্চাশের দশকের প্রথমভাগে চারঘাট উপজেলা সদরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় সন্যাসী রাণীর। তার পিতা কিশোর চন্দ্র সাহা, মা গংগা রাণী সাহা। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সন্যাসী রাণী ছোট। সন্যাসীর বিয়ের মাত্র ৩ বছরের মধ্যে নারায়ণ নামের এক সন্তান রেখে মারা যান স্বামী যতীন চন্দ্র সাহা।
১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত হন সন্যাসীর বাবা। সে সময় রাজাকাররা পাক সেনাদের হাতে সন্যাসী রাণীকে তুলে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যন্ত সন্যাসীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায় পাকিস্তানিরা।
বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় ততোদিনে অন্তঃসত্ত্বা সন্যাসী। ১৯৭২ সালের মাঝামাঝি এক সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু আগের সন্তানসহ দুই সন্তানেরই হদিস হারিয়ে ফেলেন সন্যসী। বীরাঙ্গনা হলেও কখনোই সরকারিভাবে স্বীকৃতি পাননি তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জীবনের শেষ বেলায় চারঘাট উপজেলা সদরের থানা রোডের পাশে একটি খুপড়ি ঘরে একাকী বসবাস করতেন এ বীরাঙ্গনা। সারাদিন ভিক্ষা করে যা মিলতো, তা দিয়েই কোনো রকমে দিনাতিপাত করতেন। এর সঙ্গে অর্থসম্বল বলতে তার ছিল সরকারের দেয়া সামান্য বয়স্ক ভাতা।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২০
এসএস/এমএএম/এইচজে