এ ঘটনা জানাজানি হলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. হায়দার আলী সরেজমিনে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে লেকচার প্রকাশনীর ২৪০টি গাইড বই স্তুপাকারে রাখা দেখতে পান।
স্থানীয় একাধিক সূত্র অভিযোগ করে, নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই প্রধান শিক্ষক শরীফা বেগম নিজে ও অনান্য সহকারী শিক্ষক মারফত বিভিন্ন শ্রেণিতে গিয়ে লেকচার পবলিকেশন্সের গাইড বই কিনতে ছাত্রীদের চাপ দিতে থাকেন। তারা গাইড বই কিনতে অপারগতা প্রকাশ করলে শিক্ষকরা বিরূপ আচরণ করেন। একপর্যায়ে বাধ্যতামূলকভাবে সহকারী শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষিকা ওই প্রকাশনীর গাইড বই কেনার জন্য চাপ দিলে ছাত্রীরা তাদের অভিভাবকদের জানায়।
পরে অভিভাবকরা বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অবহিত করলে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে রোববার দুপুরে তিনি বিদ্যালয়ে যান। গাইড কিনতে বাধ্য করার বিষয়ে কথা বলতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গেলে স্তুপ আকারে রাখা ওই প্রকাশনীর ২৪০টি গাইড বই দেখতে পান। এসময় প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে তিনি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. হায়দার আলী বাংলানিউজকে বলেন, প্রধান শিক্ষক বছরের শুরুতেই একটি গাইড প্রকাশনীর সঙ্গে চুক্তি করে বিদ্যালয়েই গাইড বই বিক্রি শুরু করেছেন। শিক্ষার্থীদের গাইড কিনতে বাধ্য করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি।
প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গাইডের স্তুপ দেখে তালা লাগিয়ে দিয়েছি। সরকার বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিয়ে যে সুনাম অর্জন করছে, শিক্ষকরুপী গাইড কোম্পানির প্রতিনিধিরা সেখানে ব্যবসা আরম্ভ করেছে।
তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শরীফা বেগম ঘটনা অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, পারিবারিক অনুষ্ঠানের কারণে ছুটিতে থাকায় তিনি গাইড বই সম্পর্কে কিছু জানেন না। তবে উপজেলা শিক্ষক সমিতির নেতারা তার কক্ষ ব্যবহার করে থাকতে পারেন। গাইড কিনতে ছাত্রীদের বাধ্য করার অভিযোগটিও সঠিক নয়।
লালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হযরত আলী গাইডগুলো নিজেদের দাবি করে বাংলানিউজকে বলেন, বছরের শুরুতে বিভিন্ন গাইড কোম্পানির প্রতিনিধিরা শিক্ষকদের জন্য বই দেয়। সমিতির নিজস্ব কার্যালয় না থাকায় উপজেলা সমিতির জন্য বরাদ্দ গাইডগুলো ওই বিদ্যালয়ে রাখাছিলে।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রমজান আলী আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, সরকার গাইড বই নিষিদ্ধ করেছে। সেই নিষিদ্ধ গাইড বই কেনো প্রধান শিক্ষকের কক্ষে রাখা হলো বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২০
আরএ