ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

তিন পার্বত্য উপজেলায় পরিবর্তন আনবে যে সেতু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২০
তিন পার্বত্য উপজেলায় পরিবর্তন আনবে যে সেতু

রাঙামাটি: পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির তিন উপজেলার বাসিন্দাদের ভাগ্য বদলে দেবে ‘চেঙ্গী সেতু’। সরকার ঘোষিত ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। 

আর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই উদ্বোধনের পর সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এ সেতুটি উদ্বোধন করা হলে স্থানীয়দের দীর্ঘ বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।

অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগযোগ স্থাপনে তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানকে সংযুক্ত করবে রাঙামাটির নানিয়ারচরের এ সেতু।  

সেতুটি দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে জেলার তিন উপজেলা নানিয়ারচর, লংগদু এবং বাঘাইছড়ি এক উপজেলা থেকে অরেক উপজেলায় যাতায়াত অনেক সহজ হবে। ফলে অত্র এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক উন্নতির চাকা ঘুরে যাবে বলে অভিমত স্থানীয়দের।

গত ২০১৭ সালে নানিয়ারচর উপজেলায় রাজনৈতিক এক সফরে এসে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্থানীয়দের দাবির ভিত্তিতে চেঙ্গী নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ করে দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। এরই ভিত্তিতে সরকার ২০১৮ সালের শুরুতে চেঙ্গী নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে।

সেতুটি নির্মাণ কাজ করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মণিকো অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড। এতে সার্বিক সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে, চট্টগ্রাম ২৪ (ইসিবি) ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে জানান, ব্রিজটি ৪৮৭ মিটার দীর্ঘ। এতে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা। তবে সেতুটি পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ করতে এর ব্যয় আরও বাড়তে পারে। যান চলাচলের জন্য উপযোগী করে আগামী ২-১ মাসের মধ্যে এটি উদ্বোধন হতে পারে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।

নানিয়ারচর উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন আলী বাংলানিউজকে বলেন, সেতুটি নির্মিত হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি পূরণ করে দিয়েছেন।

নানিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওহাব বাংলানিউজকে বলেন, ব্রিজটি নির্মাণ বর্তমান সরকারের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। সরকার সেই চ্যালেঞ্জ পূরণ করেছে। আর কঠিন কাজটি একমাত্র সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কারণে।

আওয়ামী লীগের এ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরও বলেন, স্থানীয়রা অনেক খুশি। তাদের দীর্ঘ বছরের দাবি সরকার পূরণ করে দিয়েছে। সেতুটি নির্মাণের কারণে খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সমাজ সবাই লাভবান হবেন। এ অঞ্চলটি একটি সমৃদ্ধশালী অর্থনৈতক অঞ্চলে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, নানিয়ারচর উপজেলা দুর্গম এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অনুন্নত। এই দুর্গমতাকে কাজে লাগিয়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা খুন, গুম, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। সেতুটি নির্মিত হওয়ায় অনেকাংশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ হবে বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।

নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিউলী রহমান তিন্নী বাংলানিউজকে বলেন, নানিয়ারচর উপজেলাটি এতদিন দুর্গম ছিল। বর্তমানে সেতুটি নির্মিত হওয়ায় এ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নতি হবে তেমনি ব্যবসায়ী সমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ লাভবান হবেন। এটি সরকারের আন্তরিকতার ফসল বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারহিন রুখসানা বাংলানিউজকে বলেন, ভাল কাজকে স্বাগত জানাতে হবে। ‘চেঙ্গী সেতু’ নির্মিত হওয়ায় এলাকাবাসীর ব্যাপক উন্নতি হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে এ প্রকৌশলী আরও বলেন, আমি এ কার্যালয়ে নতুন এসেছি। তাই তেমন কোনো তথ্য জানা নেই। কারণ সেতুটি তৈরিতে সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।