বুধবার (০৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে ওই ছাত্রীকে দেখতে যান তিনি। এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্রীর চিকিৎসার খোঁজ-খবরসহ তার সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে কথা বলেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
পরে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আজ মেয়েটিকে দেখে মনে হয়েছে-সে অনেকটা ভালো আছে। আমার সঙ্গে সুন্দরভাবে কথা বলেছে। সে একটা পাশবিক ও চরম কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
‘মেয়েটি আমাকে বলেছে, তার হয়তো হাসপাতাল আর না থাকাই ভালো। তবে আমরা তাকে বলেছি, তুমি যতদিন থাকতে চাও ততোদিনই এখানে থাকবে। ওর মা-বাবার সঙ্গেও কথা বলেছি। মেয়েটির পরীক্ষার বিষয়েও কথা বললাম। আমি তাকে বলেছি-এ বিষয়ে চিন্তার কারণ নেই। সাধারণত পরীক্ষার বিষয়ে যেসব বিধি-বিধান রয়েছে তোমার জন্যে তা শিথিল করা হবে। ’
পড়ুন>> ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার
ড. আখতারুজ্জামান বলেন, সবকিছু মিলিয়ে ওইদিন মেয়েটিকে দেখে যতটা কষ্ট লেগেছিল আজ ওর চেহারা ও স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে কত সৎসাহস, নৈতিক মানদণ্ড যে কত উঁচু সেটি তাকে দেখলে ও তার সঙ্গে কথা বললেই কেবল বোঝা যায়।
অপরাধী গ্রেপ্তারের বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য তিনি বলেন, আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কিছু তথ্য দেখেছি। দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।
‘ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করবো। আর এ বিচারের ক্ষেত্রে আইনেও যদি কোনো ঘাটতি থেকে থাকে তা পূরণেও যেন সরকার উদ্যোগী হন। ’
এদিকে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ওই ছাত্রীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছেন মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা।
‘তিনি চিকিৎসকদের কাছে বাড়ি যাওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার তাকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো আমরা,’ বলেন তিনি।
গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কুর্মিটোলা বাসস্টপে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পর ওই ছাত্রীকে মুখ চেপে রাস্তার পাশে নিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তি। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
পরে ১০টার দিকে তার জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে নির্জন স্থানে আবিষ্কার করেন। এরপর ওই ছাত্রী ঘটনাস্থল থেকে গন্তব্যে পৌঁছালে রাত ১২টার পর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান সহপাঠীরা।
এদিকে ধর্ষণের এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। ওই ছাত্রী বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় মজনু (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র্যাব।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৯
এজেডএস/এমএ