বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেএসআরএম’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান, পরিচালক সারোয়ার জাহান।
বিভিন্ন প্রকল্প প্রদর্শন শেষে জুড়ি বোর্ডের বিবেচনায় প্রথম হয়েছেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির মো. আরমান আলম, দ্বিতীয় হয়েছেন আহছান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃষ্টি সরকার ও তৃতীয় হয়েছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রহমান গোলাম মাহমুদুর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপূর্তমন্ত্রী রেজাউল করিম বলেন, সব ক্ষেত্রে নবীনদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। নিরলস প্রচেষ্টা থাকলে তারা বিকশিত হতে পারবে। সময় এসেছে স্কোর ভিত্তিক স্ক্যানিংয়ের। সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন হলেও নৈতিকতা ও মূল্যবোধের উন্নয়ন হয়নি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা একটি অনাকাঙ্খিত ব্যবস্থার মধ্যে বিরাজমান রয়েছি। সেই ব্যবস্থার মধ্য থেকে উত্তরণের জন্য আমরা যারা অবিরাম পরিশ্রম করে চলছি, তারমধ্যে আপনারাও (স্থপতি) আছেন।
বিশেষ অতিথি উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, স্থপতিদের জন্য দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্পগোষ্ঠীরা উদ্যোগ নিলে আমাদের সন্তানরা আরও উৎসাহী হবেন। আমাদের স্থাপনা হতে হবে টেকসই, সৃজনশীল ও পরিবেশসম্মত। আমি বিশ্বাস করি এটি সম্ভব হবে, আমরা যে নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি সেখানে আপনাদের সৃজনশীলতা প্রতিফলিত হবে। এখানে উপস্থাপনায় গুছিয়ে এগিয়ে যাওয়ার যে কথাটা বলা হয়েছে, আমি আশা করছি সেটি আপনারা মাথায় রাখবেন।
অনুষ্ঠানে তরুণ স্থপতিদের উদ্দেশ্যে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্থপতি ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, টেকসই নগর উন্নয়নে তিনটি বিষয় (অর্থনীতি, পরিবেশ, সাম্য) জরুরি। সেটা হচ্ছে না। উন্নয়ন হচ্ছে শুধু অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও শারীরিকভাবে সবলদের। নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের কোনো সুযোগ নেই।
ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ’র (আইএবি) সভাপতি জালাল আহমেদ বলেন, কেএসআরএম-আইএবির যৌথ উদ্যোগে প্রতিবছর এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে নতুন পেশায় আগত সৃষ্টিশীলদের স্থাপত্য শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে।
কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্টের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান বলেন, আমরা যারা স্টিল সেক্টরে কাজ করি, সব সময় পণ্যের কোয়ালিটি নিশ্চিত করা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এখানে সৌন্দর্য দেখানোর কোনো জায়গা নেই। কিন্তু যারা আমাদের পণ্য ব্যবহার করেন। কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে কিছু একটা বানান। কারও বাড়ি, ফ্যাক্টরি এমনকি আমাদের দেশের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো।
তিনি বলেন, এগুলো বানানোর পেছনে মানুষের অনেক আবেগ, অনেক স্বপ্ন থাকে। আমাদের পরিশ্রম আর সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটায় আমাদের আর্কিটেক্টসরা। তাই ভাবলাম যারা আমাদের বাড়ি-ঘর ও অন্যান্য স্থাপনার সৌন্দর্য উপহার দিচ্ছেন তাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। আর যদি ধন্যবাদ দিতেই হয়, এমন কিছু একটা করে দেওয়া উচিত, যার দীর্ঘ মেয়াদী অর্থবহ প্রভাব থাকবে। তাই আমরা আইএবির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভবিষ্যতের আর্কিটেক্টদের উৎসাহ দেওয়ার এ আয়োজন করেছি।
‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস: বেস্ট আন্ডার গ্র্যাজুয়েট থিসিস’ কর্মসূচির আওতায় ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সেরা গবেষণাপত্রের প্রকল্প প্রদর্শনীর মাধ্যমে জুড়িবোর্ড অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের নাম নির্বাচন করেন।
এ বিষয়ে কেএসআরএম’র সঙ্গে আইএবি’র সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয় ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ৩০ সেরা গবেষণাপত্র প্রদর্শন করা হবে। রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের স্থপতি ইনস্টিটিউটে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় গত ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইএবির সেক্রেটারি (শিক্ষা) স্থপতি এম আরেফিন ইব্রাহিম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম-এর সম্পাদক জুয়েল মাজহার, কেএসআরএমের উপদেষ্টা (বিক্রয় ও বিপণন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শহিদুর রহমান, বিক্রয় ও গবেষণা বিভাগের প্রধান কর্নেল আশফাকুল ইসলাম, আইএবির সহ-সভাপতি (জাতীয় বিষয়াদি) স্থপতি মামনুন মুরশেদ চৌধুরী, আইএবির সম্পাদক (শিক্ষা) স্থপতি এম আরেফিন ইব্রাহিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক স্থপতি শেখ ইতমাম সৌদ, কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজর মিজানুল ইসলাম, কেএসআরএমের ব্র্যান্ড বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক এহসান রহমান, সিনিয়র কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান, মিজান-উল-হক, সাদ হোসেন, মিঠুন বড়ুয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২০
এসই/আরআইএস/