বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বস্ত্র দিবস ২০১৯ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একই জিনিস সব সময় চলে না।
‘অর্থাৎ পোশাকের ক্ষেত্রে তার ডিজাইন, রং সবকিছুই কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়। আমি জানি যারা ক্রয় করতে আসে- বায়ার তাদের চাহিদার ওপরই সব নির্ভর করে। তারপরও আমাদের নিজস্ব একটা উদ্যোগ থাকা উচিত। ’
তিনি বলেন, আমাদের নতুন নতুন বাজার- পণ্য বাজার খুঁজে বের করতে। যেকোনো বাজারে আমরা প্রবেশ করতে পারি। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা বেশি, কোন ধরনের পোশাকের চাহিদা বেশি, কী ধরনের ডিজাইনের চাহিদা বেশি- তা বের করতে হবে। কেননা সময়ের সঙ্গে রঙের চাহিদারও পরিবর্তন হয়।
‘বছরের কোন সময় কোন রঙের প্রভাব বেশি। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের উৎপাদনকে বহুমুখী করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ’
পণ্য উৎপাদনকে বহুমুখী করতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্ব দিতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি আপনারা এই ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন, গ্রহণ করবেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে এক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করা হবে।
তিনি বলেন, যেকোনো পণ্য বাজারজাত করতে গেলে পণ্যের বৈচিত্র্য একান্তভাবে দরকার। নতুন নতুন জায়গা ও বাজারে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি যখন যেখানে যাই যেসব দেশে আমাদের পোশাক রপ্তানি হয়, সেসব দেশের সরকারের সঙ্গে যখন কথা হয়, আমি কিন্তু কথা বলি। আমি একা তুলে ধরলে হবে না। আপনারা যারা ব্যবসা করেন তাদেরও বোধহয় একটু উদ্যোগ নিতে হবে।
বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারেন ব্যবসায়ীরা। আশা করি বিদেশি বিনিয়োগও আসবে।
কৃষি খাতকে উন্নত করতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করার নীতিমালা প্রণয়নের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। যাতে দেশ এগিয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশ হবে সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশ, উন্নত দেশ, সমৃদ্ধশালী দেশ এবং আমরা তা করতে পারবো। এই বিশ্বাস আমার আছে।
নিজস্ব অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সাধারণ নাগরিক কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। তারাও উন্নত জীবন করবে। তাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখে উন্নত জীবন-যাপন করবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
‘শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় করতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম করেছেন। আর এই সংগ্রামে আমি আমার বাবা-মা, ভাইসহ স্বজনদের হারিয়েছি। ’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৯
এমইউএম/এমএ