বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এসময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, তথ্যসচিব কামরুন নাহার, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার এবং ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীসহ ডিআরইউর অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ডিআরইউ সভাপতি সদস্য সাংবাদিকদের নতুন নতুন বিষয়ে প্রশিক্ষণ আয়োজনের আহ্বান জানালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যৌথভাবে ডিআরইউ প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারে।
বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ১১ বছর আগে পত্রিকার সংখ্যা ছিল সাড়ে সাতশ’। এখন তেরশ’র বেশি; টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা ছিল ১০টি। এখন ৩৪টি সম্প্রচারে আছে এবং ৪৫টির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশে ১১ বছর আগে হাতেগোনা কয়েকটি অনলাইন ছিল। এখন কয়েক হাজার অনলাইন পত্রিকা রয়েছে। গণমাধ্যমের সঙ্গে সাংবাদিকের সংখ্যাও বেড়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকাল প্রচুর গণমাধ্যম হওয়ার কারণে বিশেষ করে অনলাইন, সেগুলোর কারণে দেখা যাচ্ছে অনেকেই যারা সত্যিকার অর্থে সাংবাদিক হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখেন না, তারাও অনেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে, বিশেষ করে অনেকগুলো অনলাইনের ক্ষেত্রে এগুলো হচ্ছে, সেখানে ব্যাপক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
‘যারা সাংবাদিক হওয়ার যোগ্য নয় কিংবা আসলে তারা সাংবাদিক নয়, কিন্তু একটা অনলাইন খুলে বসে একটা কার্ড বানিয়ে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে, গুটিকয়েক জনের জন্য বৃহত্তর সাংবাদিক পরিবারের বদনাম হয়। এটি যাতে না হয়, সেটির একটি উপায় সম্মিলিতভাবে সবাইকে খুঁজে বের করা প্রয়োজন। ’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। একটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। আরেকটি সংস্থার কাছ থেকে প্রতিবেদন পেলে নিবন্ধন দেওয়া শুরু হবে। নিবন্ধন দেওয়া হলে ভুঁইফোড় অনলাইন স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। সত্যিকার অর্থে অনলাইন হিসেবে সংবাদ পরিবেশনের জন্য নয়, ভিন্ন উদ্দেশ্যে যেগুলো খোলা হয়েছে সেগুলোর ডোমেইন বন্ধ করে দেব।
ডিআরইউ নেতারা সাংবাদিকদের চাকরির অনিশ্চয়তা তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে গণমাধ্যেম চাকরির নিশ্চয়তা শূন্যের কোঠায়। দ্রুত সময়ে গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস ও বাস্তবায়ন প্রয়োজন। সাংবাদিক কিবরিয়া চৌধুরীকে কর্মস্থল থেকে ধরে নিয়ে গেছে। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়ার ভেটিং আইন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত করে ফেলেছে। সাংবাদিকদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, সেটি সংশোধন করা হয়েছে। সহসাই এটি মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। এই আইন পাস হলে গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে আইনি সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে। সহসাই মন্ত্রিসভায় নিয়ে যেতে পারবো।
ডিআরইউ সভাপতি বলেন, সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার কূল-কিনারা পাচ্ছি না। আপনি দ্রুত বিচারের বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাগর-রনি হত্যার বিচার নিয়ে আমরা তাগাদা দিতে পারি। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। আপনাদের হয়ে আমি আবারো কথা বলবো, যাতে এটি তাড়াতাড়ি সমাধানে পৌঁছে যায়, রহস্য উদঘাটিত হয়।
নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়ে একজন দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, আমি আশা করবো সংবাদপত্রের মালিক বা পরিচালনা পক্ষ সহসা ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করবে। কারণ ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করলে সেখানে যারা কাজ করে শুধু তারাই লাভবান হবে না, প্রকৃতপক্ষে পুরো সংবাদপত্র পরিবার লাভবান হবে। এতে করে সাংবাদিকরা কাজ করতে উৎসাহ বোধ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৯
এমআইএইচ/এসএ