ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৪ বছর পর চাকরি ফিরে পেলেন অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
১৪ বছর পর চাকরি ফিরে পেলেন অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম

বাগেরহাট: বাগেরহাটে উচ্চ আদালতের রায়ে ১৪ বছর পরে চাকরি ফিরে পেয়েছেন শরণখোলা মাতৃভাষা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম। তবে উচ্চ আদালতের রায়ের পরেও তাকে স্বীয় পদে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এই শিক্ষক।

জানা যায়, ১৯৯৯ সালে নিজের জমি দিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে অনেক স্বপ্ন নিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন মো. নজরুল ইসলাম। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

এরপর ২০০৭ সালে তৎকালীন কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন মুন্সি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে বাগেরহাট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দু’টিসহ মোট চারটি মামলা করেন নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।  

এসব মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহনেওয়াজ তালুকদার জরুরি সভা ডেকে অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। এরপর থেকেও বিভিন্ন আদালত থেকে তাকে পুনর্বহালের নির্দেশ দিলেও ব্যবস্থাপনা কমিটি তাকে পুনর্বহাল করেনি।

অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের টিউশন ফি’র মাত্র ১৩ হাজার ৯২০ টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ এনে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দায়ের করেন তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন মুন্সি। অভিযোগের সূত্র ধরে ব্যবস্থাপনা কমিটিও অন্যায়ভাবে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। সাময়িক বরখাস্ত করার পর যশোর বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে আমাকে পুনর্বহালের নির্দেশ দেয়। যশোর বোর্ডের আদেশ বাতিল চেয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি শরণখোলা সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করে। ওই আদালত যশোর বোর্ডের আদেশ বাতিল করে দেন। পরে আমি আদালতের রায় বাতিল চেয়ে এবং যশোর বোর্ডের আদেশ পুনর্বহালের দাবিতে জেলা জজ আদালতে আপিল করি। জেলা জজ আদালত যশোর বোর্ডের আদেশ পুনর্বহাল করেন এবং কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির করা মামলাটি খারিজ করে দেন।  

পরবর্তীতে কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটি উচ্চ আদালতে আপিল করেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের একক বেঞ্চ বাগেরহাট জেলা জজ আদালতের রায় বহাল রেখে আমাকে অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী বেসরকারি কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্ত রাখা যাবে না। বরখাস্ত রাখার সময়ে তাকে তার বেতন ভাতার নির্দিষ্ট অংশ দিতে হবে। কিন্তু আমাকে অন্যায়ভাবে এই ১৪ বছর সাময়িক বরখাস্ত রেখেছে। আমাকে কোনো বেতন ভাতাও দেয়নি। আমার চাকরির মাত্র এক বছর আছে। এ অবস্থায় ব্যবস্থাপনা কমিটি যাতে আমাকে দ্রুত পুনর্বহাল করে আমি সেই দাবি জানাই।

পদাধিকার বলে শরণখোলা মাতৃভাষা ডিগ্রি কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, আদালতের রায় ও সরকারি নিয়মের মধ্যে থাকলে তাকে কলেজে পুনর্বহাল করা হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।