রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট রেলস্টেশনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন কোচ সম্পন্ন ট্রেন দু’টির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে রেল ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপকারভোগীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট ইউমেন্স চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়।
এসময় তিনি সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেনের নতুন কোচ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে বিমানের ফ্লাইট চালুর দাবি জানান।
নতুন সংযুক্ত ট্রেনের কোচগুলো ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা হয়েছে। সিলেট-চট্টগ্রাম রুট ছাড়াও দেশের অন্য অঞ্চলগুলোতেও ট্রেনের নতুন কোচ সংযোজন করা হয়েছে। যেগুলোর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সে অন্যান্য প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিলেটে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার এম মশিউর রহমান এনডিসি, অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব ভদ্র, পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন, উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা, কর কমিশনার রনজিত সাহা।
রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এটিএম শোয়েব প্রমুখ।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রায় তিন যুগ পর সিলেট রুটে আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে ১৪টি এবং উদয়নে ১৩টি ‘নতুন কোচে’সংযোজন করা হচ্ছে।
এর আগে ১৯৮৬ সালে পাহাড়িকা এবং ১৯৯৮ সালে উদয়ন ট্রেন এই রুটে চালু হয়েছিল। কিন্তু চালু হওয়ার পর থেকে ট্রেনগুলোতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এবার এই রুটের যাত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টিতে ট্রেনের নতুন কোচে চলাচল করতে পারবেন। ফলে যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবি লাল-সবুজের মোড়কে সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি চলাচল করবে।
রেল নতুন এই দু’টি ট্রেনে দুই হাজার ৪৪৪ জন (যাওয়া-আসা) ভ্রমণ করবেন। প্রতিটি ট্রেনেই রয়েছে এসি-২টি, এসি স্লিপার-২টি, নন এসি-৭টি, পাওয়ার কার গার্ড রুমসহ নানাবিধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই নতুন কোচ সংযোজনের কারণে অনেকের ট্রেনে ভ্রমণের আস্থা বাড়বে বলে রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ইন্দোনেশিয়ায় তৈরি নতুন এই কোচগুলোর মধ্যে ঢাকা-জামালপুর রুটের ‘জামালপুর এক্সপ্রেসও রয়েছে।
রেল সূত্র আরও জানায়, ২৬ জানুয়ারি থেকে উদয়ন ট্রেনে এসি বার্থ থাকবে ৩৬টি, এসি চেয়ার ১১০টি, শোভন চেয়ার ৪৫০টি। অর্থাৎ এই ট্রেনে সর্বমোট টিকিট থাকবে ৫৯৬টি।
অপরদিকে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনে এসি সিট ৬৬টি, এসি চেয়ার ১১০টি, শোভন চেয়ার ৪৫০টিসহ সর্বমোট আসন থাকবে ৬২৬টি। কিন্তু বিপরিতমুখী অপর উদয়ন ও পাহাড়িকা ট্রেনের অধিকাংশই শোভন চেয়ার টিকিট হওয়ায় ২৬ জানুয়ারির পর থেকে নতুন ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। নতুন কোচ ও আধুনিক সুবিধা সংযোজন হওয়ায় উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেসের একমুখী ট্রেনের ক্ষেত্রে আসন বিন্যাস ও টিকিটের ভাড়াও পরিবর্তন হয়ে যাবে।
আগের ট্রেন দু’টি ১৬/৩২ কম্পোজিশনে চলাচল করলেও নতুন নিয়মে ১৪/২৮ কম্পোজিশনে চলবে। আগের ট্রেন দু’টিতে নন এসি প্রথম শ্রেণি ছিল একটি কোচ। কিন্তু ২৬ জানুয়ারি থেকে এসি প্রথম শ্রেণি কোচ থাকবে দু’টি। এছাড়া আগে একটি এসি চেয়ার কোচের পরিবর্তে দু’টি এসি চেয়ার এবং আগের সব শোভন শ্রেণির কোচ পরিবর্তন করে ৯টি শোভন চেয়ার কোচ সংযোজন করা হবে। মূলত শোভন চেয়ার ৭টি হলেও দু’টি খাবার গাড়ির প্রতিটিতে ৩০টি করে শোভন চেয়ার ধরে একটি কোচ বিবেচনা করেছে রেলওয়ে।
নতুন ট্রেনের সময়সূচি জানা গেছে, উদয়ন এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ে রাত পৌনে ১০টায় এবং সিলেট পৌঁছে ভোর ৬টায়। আবার সিলেট থেকে পাহাড়িকা হয়ে সকাল ৯টা ৪০মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পাহাড়িকা চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশে সকাল ৯টায় ছেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
এনইউ/এএটি