তিনি বলেন, হাজার হাজার বছর মন্দিরের পাশে মসজিদ, মন্দিরের পাশে গীর্জা, আজান, ঘণ্টা, উলুধ্বনি আমাদের বিভাজন করতে পারেনি। সেই সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতার নিবিড় বন্ধন নানা কারণে কিছুটা ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গেছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্রাহ্ম সমাজের ১৯০তম মাঘোৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উৎসবে অন্যান্যের মধ্যে ব্রাহ্ম সমাজের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, চিত্তকে নির্মল করার আহ্বান ধারণ করতে পারলে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে ধর্মের নামে উশৃঙ্খলা, উগ্রতা ও সাম্প্রদায়িকতা থাকে না। সব ধর্মের মর্মবাণী এক। মত ও পথের ভিন্নতা থাকলেও গন্তব্য সবার একই। সব ধর্মাবলম্বীদের উচ্ছ্বাসের শব্দ একইভাবে উচ্চারিত। বেদনার কষ্টে সবার ক্রন্দনের ভাষাও একই। নৈবেদ্য লাভের প্রচেষ্টা সবার এক। সব ধর্মগ্রন্থের মৌলিক কথাও একই। কোন ধর্ম অপরাধের কথা বলে না, সাম্প্রদায়িকতার কথা বলে না।
সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায়ের অবদানের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তার অবদান অস্বীকার করতে পারবেন না। তিনি তার দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজ সংস্কারের জন্য যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন, ১৯০ বছরের দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারেনি যে তার উদ্যোগ কোনভাবে সঠিক ছিল না।
মন্ত্রী আরও বলেন, ব্রাহ্ম সমাজের সাধনা, চিন্তা, মননশীলতা যারা ধারণ ও লালন করেন তারা উদারতার সঙ্গে কাজ করছেন। এ উদারতা ছড়িয়ে দিতে হবে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে। একইভাবে অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও ধর্মের মৌলিক কথা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে শান্তির পৃথিবী বিনির্মাণে অবদান রাখতে হবে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ১৯৭১ সালে ইসলামের নামে অন্য ধর্মের নারীদের ধর্ষণ, তাদের সম্পদ লুণ্ঠন, জোর করে ধর্মান্তরিত করা বা দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিলো। কিন্তু ইসলাম সেটা সমর্থন করে না। আবার বিশ্বের কিছু অঞ্চলে সনাতন ধর্মের নাম নিয়ে কেউ কেউ উগ্রভাবে অপর ধর্মের মানুষের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েন। যারা এ কাজ করেন তারা সঠিকভাবে ধর্ম বোঝেন না।
সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য অবিরাম পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
জিসিজিবি/ওএইচ/