রাজধানীর গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে নকশাবর্হিভূত অবৈধ স্থাপনার ভাঙার কাজ এখনও চলমান রয়েছে। ভবনের ভেতরে গ্রাউন্ডফ্লোর থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোরেই অবৈধ স্থাপনা থাকতে দেখা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ও দোকানীরা বলছেন, সিটি করপোরেশনের একটি সিন্ডিকেটকে সঙ্গে নিয়ে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেট কমিটির সদস্যরা এসব অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছে। সিটি করপোরেশন মার্কেটের এসব অবৈধ দোকানগুলো ভেঙে ফেলার কারণে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। যারা সবাই পথে বসে গেছে। এখন মার্কেট কমিটির লোকদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কর্মকর্তারা বলছেন, সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে ৭৮৫টি দোকান রয়েছে। এরমধ্যে মার্কেটের নকশার বাইরে অসংখ্য দোকান নির্মাণ করা হয়েছিল। যার কারণে মার্কেটে কোনো ফাঁকা স্পেস রাখা হয়নি। পুরো মার্কেটটি ঘুপচি গলির মত ছিল। এবার এসব অবৈধ দোকান ভেঙে দেয়া হচ্ছে।
মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে এক দোকানী আমিন উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আন্ডারগ্রাউন্ডের সিঁড়ির সঙ্গে আমার একটি দোকান ছিল। ১৮ লাখ টাকা দিয়ে ২০১৬ সালে আমি দোকানটি কিনেছিলাম। মার্কেট কমিটির সদস্যরা এই দোকান বিক্রি করেছিল। এখন শুনছি মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে কোনো দোকান হবে না। এখানে পার্কিং করা হবে।
তবে আমরা যারা দোকান কিনেছি তাদের কি হবে? সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে এই দোকান কেনা হয়েছিল। এখন ভেঙে দিয়েছে। আমি পথের ফকির হয়ে গেছি। দোকানের ভেতরে আমার ৫০ লাখ টাকার মালামাল ছিল। এখন তাও বাইরে গর্দা মালের (রাবিশ) দামে বিক্রি করতে হবে। এখন আমার কিছুই বলার নাই। শুধু অনুরোধ করছি আমাদের পুনর্বাসন করা হোক। - যোগ করেন তিনি।
মার্কেটের দ্বিতীয় তলার দোকানী মো. শহীদ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমার দুটি দোকান মার্কেটের ভেতরে বৈধভাবে করা হয়েছে। আমার কোনো দোকান ভাঙা পড়বে না। ক্ষতিগ্রস্ত আমরাও হয়েছি। দোকান ভাঙা না পড়লেও এই কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে আছে। কাস্টমার ছুটে যাচ্ছে। একে করোনা মহামারি অন্যদিকে উচ্ছেদ। দুটি মিলে আমার পড়েছি বিপাকে।
সরেজমিনে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের অবৈদ দোকানগুলোর ভাঙার কাজ চলমান রয়েছে। ভবনের ভেতরে অবৈধ দোকানের দেয়াল ও পিলার ভাঙার কাজ চলছে। এদিকে বর্জ্যগুলো ডাম্পিং করা হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ডিএনসিসি সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট মো. মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, মার্কেটের ভেতরে অবৈধ স্থাপনা ভাঙার কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত ৫ শতাধিক দোকানের দেয়াল ও ফলস পিলার ভাঙা হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুতই আমরা আমাদের কাজ সম্পাদনা করতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২০
এসজেএ/এমএমএস