ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চেক ডিজঅনার মামলায় এমপির ভাইয়ের সাজা, বাদীর পরিবার সমাজচ্যুত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২১
চেক ডিজঅনার মামলায় এমপির ভাইয়ের সাজা, বাদীর পরিবার সমাজচ্যুত ...

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় চেক ডিজঅনার মামলায় সাবেক সংসদ সদস্যের ভাইয়ের সাজা হওয়ায় প্রতিশোধ নিতে বাদীর পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই পরিবারকে এলাকা থেকে বিভক্ত করে রাখায় তাদের সন্তানেরা লেখাপড়ারও সুযোগ পাচ্ছে না।

প্রশাসন জানিয়েছে, দ্রুত পরিবারটিকে স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে অভিযুক্ত সাবেক সংসদ সদস্য বলছেন, বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের সমাজচ্যুত করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সনে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন জাতীয়পার্টির নেতা এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু। তখন তার চাচাতো ভাই ইকরামুল ইসলাম চৌধুরী নবীগঞ্জের কুর্শি গ্রামে সাফারুন বিবি নামে এক নারীর কাছ থেকে ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ৩২ শতক জমি কিনেছিলেন। জমির মূল্য হিসেবে ইকরামুল চৌধুরী সাফারুন বিবির জামাতা (মেয়ের স্বামী) লিটন মিয়াকে ৯ লাখ টাকার দুইটি চেক দেন। বাকি ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা কিছুদিন পরেই দেওয়ার কথা হয়। সেই চেক ব্যাংকে জমা দিলে ডিজঅনার হয়। ইকরামুল ইসলাম চৌধুরীকে বিষয়টি জানানোর পর টাকা দেওয়ার ব্যাপারে টালকাহানা করে।  

চার বছর পরও টাকা না পেয়ে ২০১৮ সালে চেক ডিজঅনার মামলা করেন লিটন মিয়া। এ মামলায় সাবেক এমপির ভাই ইকরামুল ইসলাম চৌধুরীকে ১ বছর কারাদণ্ড ও ৯ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৮ নভেম্বর লিটন মিয়ার পরিবারকে একঘরে করার সিদ্ধান্ত দেন সাবেক এমপি। তিনি এলাকায় সালিশ বসিয়ে তাদের সমাজচ্যুত করে রাখেন।

সাফারুন বিবি ও তার জামাতা লিটন মিয়া জানান, প্রায় দেড় মাস ধরে এলাকার কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলেন না। রাস্তাঘাটে চলাচলেও বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হয়। পরিবারে থাকা শিশু-কিশোরদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, একটা পরিবারকে সমাজচ্যুত করা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অমানবিক। ইতোমধ্যেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে বলে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন সেখানে হস্তক্ষেপ করে দ্রুত পরিবারটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে।

তবে সাবেক সংসদ সদস্য এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু বলেছেন, লিটন মিয়া, তার বাবা ও দাদা বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তাই এলাকাবাসী তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।