ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘মুজিববর্ষে মসলিন ফিরে পাওয়া জাতির বড় অর্জন’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
‘মুজিববর্ষে মসলিন ফিরে পাওয়া জাতির বড় অর্জন’

রাজশাহী: বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, মুজিব বর্ষে মসলিন ফিরে পাওয়া বাঙালি জাতির বড় অর্জন।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ভবনে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত ‘মসলিন প্রযুক্তি পুনরুদ্ধার প্রকল্প’ শীর্ষক গবেষণার অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে দেশকে স্বাধীন করেছি। বাঙালি জাতির ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য মসলিন পুনরুদ্ধারের প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। মসলিন ফিরে পাওয়া বাঙালি জাতির বড় অর্জন। বাঙালি জাতির ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য যা যা করা দরকার আমার তাই করার পরিকল্পনা নিয়েছি। ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকার মসলিন পুনরুদ্ধার প্রকল্প হাতে নেয়। পরে তার ইতিবাচক ফল আসে।

তিনি বলেন, প্রথমে আমার একটু সংশয় ছিল, এর সুতা এত সূক্ষ্ম যে শুরুতে তো তুলাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে গবেষকেরা আমাকে বলেছিলেন, আমরা নিশ্চয়ই করতে পারব। তারা শেষ পর্যন্ত সত্যিই সফল হয়েছেন। আশা করি, মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে মসলিন তুলে দিয়ে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, এটিকে এখন বাণিজ্যিক করা যাই কিনা সেটি নিয়েও চিন্তা ভাবনা করা হবে। প্রথমে এলিট শ্রেণির মানুষ যাতে পরতে পারে, একটি ঐতিহ্য যাতে ধরে রাখা যায়। মার্কেটে নিয়ে যেতে চাই এই মসলিনকে। এরপর এটি সাধারণ মানুষ যাতে কিনতে পারে এই জন্য এটি নিয়ে আমরা চিন্তা করব। এটি নিয়ে গবেষণা করে আরও কম মূল্যে দেওয়া যায় কিনা সেটি আমার দেখব।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এ সময় উল্লেখ করে বলেন, প্রথম দিকে কাঁচামাল না পাওয়া কিছুটা সংশয় হলেও গবেষক দলের একান্ত প্রচেষ্টায় ২০০ বছরের পুরনো মসলিন পুনরুদ্ধার হয়েছে। এটি মুজিববর্ষের অন্যতম অর্জন। বাঙালি জাতির আরও একটি ঐতিহ্য হচ্ছে সিল্ক, যা রাজশাহীতে রয়েছে। সিল্ককে কিভাবে আরও সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।

সভার শুরুতে গবেষণা প্রকল্পের সদস্য অধ্যাপক মনজুর হোসেন এই প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ের কার্যক্রম কিভাবে সম্পন্ন হয়েছে তার ওপর নির্মিত একটি স্লাইড প্রদর্শন করেন। তিনি জানান, ২০১৪ সালের অক্টোবরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মসলিনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার কথা বলেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশে তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্য হচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. মনজুর হোসেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহ আলীমুজ্জামান, বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, বিটিএমসি ঢাকার মহাব্যবস্থাপক মাহবুব-উল-আলম, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের উপমহা ব্যবস্থাপক এএসএম গোলাম মোস্তফা ও তাঁত বোর্ডের জ্যেষ্ঠ ইনস্ট্রাক্টর মো. মঞ্জুরুল ইসলাম। পরে গবেষণাকাজের স্বার্থে আরও সাত সদস্যকে এই কমিটিতে যুক্ত করা হয়। গবেষকদের নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবে তারা মসলিন শাড়ি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণা প্রকল্পের সদস্য মনজুর হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক মো. আইয়ুব আলী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
এসএস/এইচএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।