ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাশকতার উদ্দেশ্যে পুরাতন ভিডিওর লাইভ প্রচার: র‍্যাব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১
নাশকতার উদ্দেশ্যে পুরাতন ভিডিওর লাইভ প্রচার: র‍্যাব কথা বলছেন র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন

ঢাকা: হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতারের পর নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে বিভিন্ন পুরনো ভিডিও ‘লাইভ’ আকারে প্রচার করা হয়েছে। এভাবে পুরনো ভিডিও ছড়িয়ে গুজব রটানোয় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে র‍্যাব সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের আইটি টিম নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে পুরনো ভিডিও ‘লাইভ’ আকারে ছড়াতো। যারা এ ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করেছে তাদেরকে র‍্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল শনাক্ত করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আইনের আওতায় আনা হবে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী যে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছিল, ঠিক তখন থেকেই একটি কুচক্রী মহল দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা-অরাজকতা সৃষ্টি করতে বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে। র‍্যাব এসব ব্যক্তি বা দলকে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র দেখে ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শনাক্ত করে। এসব অপরাধী শনাক্তে র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখা অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাবই প্রথম অভিযান চালিয়ে ঘোড়ায় চড়ে বিক্ষোভ করা হেফাজতের এক কর্মীকে ও ‘শিশু বক্তা’খ্যাত রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।

দল কিংবা গোষ্ঠী যারা- নাশকতার চেষ্টা করেছে কিংবা নাশকতার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে, সবাইকেই ধাপে ধাপে র‍্যাব গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে। ইতোমধ্যে হেফাজতের ১২ জন নেতাকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারদের বিষয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতারদের বেশিরভাগেরই দেশের বিভিন্ন জেলায় নাশকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন, যারা নাশকতা সৃষ্টির জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। তাদের আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করেছি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখেছি নেতৃস্থানীয় নেতা কেউ গ্রেফতার হলে তারা পুরনো ভিডিও ‘লাইভ’ বলে শেয়ার দিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতো।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র‍্যাব এখন পর্যন্ত শতাধিক পেজের সন্ধান পেয়েছে, যেসব ব্যবহার করে ‘লাইভ’ করা হতো। আমরা একজন ব্যক্তির নামে একাধিক আইডি পেয়েছি, ওই আইডিগুলো দিয়ে এসব ‘লাইভ’ শেয়ার দেওয়া হতো।

যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের সঙ্গে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি-না, জানতে চাইলর কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র‍্যাব কোনো দল কিংবা ব্যক্তিকে টার্গেট করে অভিযান পরিচালনা করে না। যারা দেশব্যাপী নাশকতা সৃষ্টি করেছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে এবং যারা রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

যাদের গ্রেফতার করেছি তাদের বেশিরভাগেরই নিজেদের শক্তি জানান দেওয়া এবং রাজনৈতিক পরিচয়টাকে জানান দেওয়া ছিল প্রধান উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য তারা ঢাল-তলোয়ার হিসেবে বিভিন্ন মাদরাসা বা এতিমখানার কোমলমতি শিশুদের ব্যবহার করেছে।

মামুনুল হকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামুনুল হক যে দলের নেতা, সেই দলের কয়েকজনকে আমরা গ্রেফতার করেছি বিভিন্ন মামলার আওতায়। তাদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের মামলা রয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে নাশকতার জন্য মামলা হয়েছে। র‍্যাবের গ্রেফতার অভিযান এবং গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১
পিএম/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।