ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

জয়ী চেয়ারম্যানের মাছের খামারে বিষ ঢেলে প্রতিশোধ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
জয়ী চেয়ারম্যানের মাছের খামারে বিষ ঢেলে প্রতিশোধ!

নোয়াখালী: নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে জয়ী চেয়ারম্যানের মাছের খামারে বিষ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে পুকুরের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার মাছ মারা গেছে বলে দাবি করেছেন ওই নতুন চেয়ারম্যান।

এদিকে মরা মাছে পচন ধরায় দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে পাশের মসজিদের মুসুল্লিরা ওই পুকুরে ওযু, গোসল কিছুই করতে পারছেন না। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে পুকুরের পানি। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রশাসন বলছে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কবিরহাট থানার ওসি টমাস বড়ুয়া।

নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াছ অভিযোগ করেন, গত ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার রাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরুল আমিন রুমির লোকেরা তার দুই একর আয়তনের মাছের খামারে বিষ দেয়। এতে পুকুরের ১০-১২ কেজি ওজনের মাছসহ বিভিন্ন আকারের মাছ মরে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত তিন বছর পুকুরটি থেকে কোনো মাছ ধরা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে মনে হয় আমি অনেক বড় পাপ করেছি। আমি এ বিষয়ে প্রথমে মৌখিকভাবে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানালেও এখনও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনেও আসেনি। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

স্থানীয় বাসিন্দা অলিউল্যাহ জানান, নির্বাচনের দিন ভোরে মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে এসে দেখি ৮ থেকে ১০কেজি ওজনের মাছ থেকে শুরু করে পুকুরের ছোট বড় সব মাছ মরে ভেসে আছে। পুকুরে ওযু করার মত কোনো অবস্থা নেই। প্রথমে এলাকার লোকজন বড় বড় মরা মাছগুলো নিয়ে গেছে। যদি তা না নিত তাহলে পরিবেশ আরও খারাপ হতো।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ইলিয়াসের সমর্থক স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাকির হোসেন (৫০) জানান, সালাম মেম্বারের ছেলে সুজন, একই এলাকার রাজিব, রিপনসহ অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন লোক রাতে ওই পুকুরের পাশে মসজিদ ও এলাকার সব বাতি বন্ধ করে পুকুরে বিষ ঢেলে চলে যায়।

মুসুল্লি আবদুল্যাহ সৈকত জানান, গত কয়েকদিন ধরে পুকুরের মাছ মরে ভেসে আছে। এখন পঁচা দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। আমরা এখানে ওযু-গোসল কিছুই করতে পারছি না। সম্পূর্ণ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে  পড়েছে পানি।

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে নুরুল আমিন রুমি বলেন, ওই পুকুর নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো নেতাকর্মী জড়িত নেই। প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে মাছ মারার মত ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে, সঠিক তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টমাস বড়ুয়া জানান, এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদ ইলিয়াছ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, ৩১ ডিসেম্বর,২০২১
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।