ঢাকা: গত পাঁচ বছরে সংঘটিত জঙ্গি, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশনের প্রতিবেদন আগামী ১৯ জানুয়ারি প্রকাশ করা হবে।
শনিবার (১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে গঠিত ‘বাংলাদেশে জঙ্গি মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশনে’র তৃতীয় সভা থেকে এ কথা জানানো হয়।
কমিশনের সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ২০১৬ সালে ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান ক্যাফেতে জঙ্গি সন্ত্রাসী হামলা থেকে আরম্ভ করে ২০২১-এর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে জঙ্গি, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের পাঁচ বছরের ঘটনাবলীর উপর শ্বেতপত্র আগামী ১৯ জানুয়ারি (২০২২) নির্মূল কমিটির ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, হেফাজতে ইসলামের নেতাদের রাজনৈতিক পরিচয় ও বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা এবং হেফাজত নিয়ন্ত্রিত ১০০০ মাদ্রাসার তালিকা, ২৫টি আলোচিত জঙ্গি সংগঠনের পরিচিতি, গুলশান হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর্যালোচনা, রোহিঙ্গা শিবিরে জঙ্গি-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, রোহিঙ্গা ৪০ জঙ্গি সংগঠনের ইতিবৃত্ত, ১০০ রোহিঙ্গার জবানবন্দি, বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশনের নিজস্ব সরেজমিন ১০টি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, ওয়াজের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিস্তার এবং ৪০ জন বক্তার পরিচিতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জঙ্গি তৎপরতা, জঙ্গিদের বিভিন্ন বইপুস্তক, ম্যাগাজিন ও মুখপত্র পর্যালোচনা, কওমি শিক্ষা, কওমি মাদ্রাসায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া এবং পাঠ্যসূচিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংযোজন সম্পর্কে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ২৫টি সংগঠনের বক্তব্য। এছাড়া জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ওপর নির্বাচিত কলাম, সংবাদ ও ছবি প্রকাশ করা হবে।
দুই খণ্ডে প্রকাশিতব্য এই শ্বেতপত্রে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন জঙ্গি, মৌলবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের বহুমাত্রিক কার্যক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি এ বিষয়ে সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করা হবে।
সাম্প্রতিককালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, রংপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সংঘটিত মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের উপদ্রুত এলাকা সফর করে ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের বক্তব্য গণশুনানির মাধ্যমে নথিবদ্ধ করা হয়, যা শ্বেতপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সমাজকর্মী আরমা দত্ত, রিজিওনাল এন্টি টেররিস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, কমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান হাফেজ মওলানা জিয়াউল হাসান, কমিশনের সচিবালয়ের সমন্বয়কারী ও নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, সচিবালয়ের সদস্য ও শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদসন্তান তৌহিদ রেজা নূর, অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২২
আরকেআর/জেএইচটি