ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিজয়নগরে কমেছে লালি গুড় উৎপাদন

মেহেদী নূর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২২
বিজয়নগরে কমেছে লালি গুড় উৎপাদন বিজয়নগরে কমেছে লালি গুড় উৎপাদন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে আখ থেকে লালি গুড় (তরল গুড়) উৎপাদন করে শতাধিক পরিবার। বিজয়নগরে এবার প্রায় আড়াই কোটি টাকার লালি উৎপাদিত হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

নিজেদের জমিতে আখ চাষ করে, কেউ বা আবার আখ কিনে তৈরি করছেন সুস্বাদু লালি। বছরে চার মাস চলে লালি গুড় উৎপাদন।

এক সময় সীমান্তবর্তী উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ঘরে ঘরে উৎসবমুখর পরিবেশে পরিবারের সবাই মিলে এ কাজে নিয়োজিত থাকতেন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এবং মাল্টা, পেয়ারা, লিচুসহ বিভিন্ন ফলের বাগান করায় অনেকটাই কমে গেছে আখের চাষ। যার প্রভাব পড়েছে লালি উৎপাদনেও। এতে দিন দিন লালির উৎপাদন কমে গেলেও এখনও ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে আছে কিছু পরিবার।

লালি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতরা বলেন, দিন দিন সব কিছুর দাম বাড়ায় পরিশ্রম করেও তেমন লাভবান হওয়া যাচ্ছে না। তবে এ সময়টাতে অবসর থাকায় বাড়তি আয়ের জন্য লালি উৎপাদন করছি।

বিষ্ণুপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের সবাই মিলে লালি উৎপাদনের কাজে সহযোগিতা করছেন। কেউ ক্ষেত থেকে আখ কেটে আনছেন, কেউ আবার মহিষ দিয়ে আখ মাড়াই করে রস সংগ্রহ করছেন। সেই রস আবার মাটির চুলায় জ্বাল দিচ্ছেন কেউ। এভাবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে কাজ।

লালি তৈরি কারিগর শাফিয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ৩০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত। অন্যান্য ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের জন্য বছরে চারমাস এ কাজ করে থাকি। প্রতিদিন ৫০/৬০ লিটার লালি উৎপাদন করছি। পাইকার ও আশপাশের লোকজন এখান থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছে।  

রাসেল মিয়া নামে আরেক কারিগর বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রতি কানি আখ চাষ করতে ৫০ হাজার টাকার মত খরচ পড়ে। অনেক সময় আখ কিনেও আনি। প্রতি লিটার লালি ১০০ টাকা করে বিক্রি করি। প্রতি মৌসুমে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হলে এতে লাভ হয় এক থেকে দেড় লাখ টাকা।

বেশ কয়েকজন লালি কারিগর বাংলানিউজকে বলেন, আগে আমাদের গ্রামে অনেক পরিবার লালি উৎপাদন করত। অনেকে পেশা বদল করায় এখন তা কমে গেছে।  

লালি কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতা বলেন, বাজারের লালিতে অনেক সময় ভেজাল মেশানো থাকে। এখানকার লালি প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবিউল হক মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, চলতি মৌসুমে ৭০ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। যা দিয়ে প্রায় আড়াই কোটির টাকার লালি উৎপাদিত হবে। এক মণ আখ থেকে ২৫ কেজি রস হয়, তা জ্বাল দিয়ে ১৫ কেজি লালি বানানো হয়। কোনো ক্ষতিকর উপাদান মেশানো হচ্ছে কি না, তা তদারকি করছে স্থানীয় কৃষিবিভাগ।

 

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।