ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাহারি পিঠার স্বাদ-গন্ধ নিয়ে শুরু হলো জাতীয় পিঠা উৎসব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২২
বাহারি পিঠার স্বাদ-গন্ধ নিয়ে শুরু হলো জাতীয় পিঠা উৎসব

ঢাকা: শীত এসেছে বেশ কিছু দিন আগেই। ঐতিহ্যপ্রিয় বাঙালির ঘরে শীত এলেই হাজির হয় পিঠার আমোদ।

গ্রামে-গঞ্জে কৃষাণী আর গৃহস্থবাড়িতে টাটকা চালে তৈরি হয় বাহারি পিঠা-পুলি। পিঠার মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে মূলত ঋতুর প্রথম ভাগ থেকেই। তবে শহরে সেই পরিচিত দৃশ্য নেই বললেই চলে। তাইতো শীত এলে শহরের মানুষের প্রধান আনুষ্ঠানিকতায় রূপ নেয় পিঠা উৎসব। এবার মুখরোচক সব পিঠার ঘ্রাণে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হলো সেই প্রাণের উৎসব।

একদিকে যখন পিঠার ঘ্রাণ, তখন মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে নৃত্য-ছন্দের সুর মূর্ছনা। একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের স্টলে স্টলে পিঠার পসরা সাজিয়ে চলছে বিকিকিনি। বাহারি রঙের সঙ্গে বৈচিত্র্যময় ডিজাইন ও নকশায় অনন্য হয়ে উঠেছে এক একটি পিঠা। কনকনে শীতের সন্ধ্যায় গ্রামে চুলার পাশে বসে যেমন পিঠা খাওয়া হতো, তেমনি এখানেও যেন একই দৃশ্য। দোকানে পিঠা বানাচ্ছে বিক্রেতা আর কিনে খাচ্ছেন ক্রেতারা। আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য পিঠাপুলির সঙ্গে সেলফি তুলে পিঠা কেনা ও খাওয়ার দৃশ্যকে স্মৃতিময় করে রাখার চেষ্টাও লক্ষণীয়।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে একাডেমির কফি হাউজের মুক্তমঞ্চ থেকে নানা রঙের বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে ১০ দিনের এ পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, পিঠা বাঙালির চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। শীত আর পিঠা একে অপরের পরিপূরক। বাংলার গ্রামের মা, চাচি, খালা, বোন, ভাবিদের চিরায়ত সেই ঐতিহ্য নগরজীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার পথে। আবহমান বাংলার এ ঐতিহ্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে পিঠা উৎসবকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে।

আয়োজনে জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী আনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যজন আতাউর রহমান, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ, উৎসবের পৃষ্ঠপোষক সিটি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক জাফর সিদ্দিকী, নৃত্যশিক্ষক আমানুল হক প্রমুখ।

এবার সারাদেশের পিঠাশিল্পীদের অংশগ্রহণে প্রায় ৫০টি স্টল দিয়ে সাজানো হয়েছে এ উৎসব। আর সেসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ২০০ রকমের পিঠা। এসব পিঠার মধ্যে মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, আন্দশা, কুলশি, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, খেজুর পিঠা, ক্ষীর কুলি, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, সর ভাজা, পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি, নারকেল জিলাপি, তেলের পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, চাঁদ পাকান পিঠা, ঝুরি পিঠা, ছাঁচ পিঠা, দুধ চিতই, বিবিখানা, ভাঁপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল পিঠা, মালপোয়া, নকশি পিঠা উল্লেখযোগ্য।

বাঙালি ঐতিহ্যে কী সুন্দর করেই না মা-বোনেরা তাদের কাছের মানুষগুলোকে পিঠা পরিবেশন করেন। এটাই যেন তাদের সৌন্দর্য। ঠিক তেমনি ঘরের আপ্যায়নের মতোই আপ্যায়ন মিলবে এ পিঠা উৎসবে। আর উৎসব চলবে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। পিঠা খাওয়া ও বিকিকিনির পাশাপাশি প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হবে নাচ, গান, আবৃত্তি, অ্যাক্রোবেটিকসহ ও পথনাটকসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা।

বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২২
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।