ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফেলানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে কবর জিয়ারত ও দোয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২২
ফেলানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে কবর জিয়ারত ও দোয়া মৃত্যুবার্ষিকীতে ফেলানীর কবর জিয়ারত করা হচ্ছে

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নির্মমভাবে নিহত বাংলাদেশি তরুণী ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ১১ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনিটারী গ্রামের নিজ বাড়িতে ফেলানীর কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

ফেলানীর আত্মার মাগফেরাৎ কামনায় কলোনিটারী গ্রামে আয়োজিত কর্মসূচিতে তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগ দেন ঢাকাস্থ নাগরিক পরিষদ।

এ সময় নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন ফেলানীর খুনী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি, ফেলানীর পরিবারসহ সীমান্ত আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত সব ব্যাক্তি ও তাদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পার্ক রোডের নাম ফেলানী স্মরণী রাখার দাবি জানান।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, বিশ্বব্যাপী সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও ৭ জানুয়ারি ফেলানী দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর ২০১৫ সালে তারা একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয় এটি বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘের সদস্য কোনো রাষ্ট্রকে প্রস্তাব আনতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এবারও দেশব্যাপী ফেলানী দিবস পালনের দাবিতে গত ১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরা মানববন্ধন করেছি। কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তের নাম ‘ফেলানী সীমান্ত’ করার দাবিতে ৬ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবা নুর ইসলামের সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন ফেলানী। মই বেয়ে কাঁটাতার পেরোনোর সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হয় তরুণী ফেলানী। বাবা নুর ইসলাম প্রাণে বেঁচে গেলেও মেয়ে ফেলানীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে কাঁটাতারের বেড়ায়।

পরে এ নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয় নিজ বাহিনীর আদালত। ফেলানীর বাবা-মা রায় প্রত্যাখ্যান করলে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করে ভারত। পরের বছর ২ জুলাই অভিযুক্তকে আবারও নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।

এরপর ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচারের আশায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে যৌথভাবে রিট আবেদন করেন ফেলানীর বাবা ও মানবাধিকার সংগঠন সুরক্ষা মঞ্চ। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রিট আবেদনটি গ্রহণ করলেও একাধিকবার শুনানির তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় এখনও ন্যায় বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, ৭ জানুয়ারি, ২০২২
এফইএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।