ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ জুন ২০২৪, ১৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

শিশু আব্দুল্লার অবস্থার উন্নতি, খাওয়ানো হচ্ছে মুখে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২২
শিশু আব্দুল্লার অবস্থার উন্নতি, খাওয়ানো হচ্ছে মুখে চিকিৎসাধীন আব্দুল্লার সংগৃহীত ছবি

ঢাকা: রাজধানীর শ্যামলিতে আমার বাংলাদেশ হসপিটালে চিকিৎসাধীন যজম শিশুর মা বিল দিতে না পারায় বের করে দেওয়ার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া পথে মারা যায় আহমেদ। আর অপর শিশু আব্দুল্লাহকে ঢামেক হাসপাতাল ভর্তি করা হয়।

সেখানে শিশুটির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। মুখে অল্প পরিমাণ করে খাবারও খাওয়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিশুটির মা।  

শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) রাতে বাংলানিউজকে এ কথা জানান আব্দুল্লার মা আয়েশা আক্তার।  

এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে ঢামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয় আব্দুল্লাহকে। বর্তমানে হাসপাতালটির ২২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রেডিয়েট্রিক বিভাগে রাখা হয়েছে।  

মা আয়শা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটির অবস্থা আগের চাইতে এখন অনেকটাই ভালো। চোখ মেলে তাকাচ্ছে। তেমন কান্নাও করছে না। চিকিৎসকের পরামর্শে মুখে হালকা খাওয়াচ্ছিও।  

আমার বাংলাদেশ হসপিটালে মালিককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আয়শা আক্তার বলেন, আমি চাই ওদের এমন একটা বিচার হোক, যাতে আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। কোনো গরীব যাতে এভাবে লাঞ্ছনার শিকার না হয়।  

এর আগে ৬ জানুয়ারি বেলা ৩টার দিকে আমার বাংলাদেশ হসপিটাল থেকে যমজ দুই শিশু আহমেদ ও আব্দুল্লাহকে ঢামেক হাসপাতালে আনার পথে একজন (আহমেদ) মারা যায়।  

এ ব্যাপারে ঢামেকের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, শিশু আব্দুল্লাহকে যখন ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন তার অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। এখন হাসপাতালে ২২৩ নম্বর ওয়ার্ডের শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে এবং তাকে স্পেশাল কেয়ার করা হচ্ছে।

যা ঘটেছিল: যমজ দুই শিশু আহমেদ ও আব্দুল্লাহকে চিকিৎসা করাতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন মা আয়েশা আক্তার। তার স্বামী সৌদী প্রবাসী। গত ০২ জানুয়ারি দালালরা তাকে ফুসলিয়ে ভালো চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যান শ্যামলীতে 'আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল। দুইদিন চিকিৎসা সেবার মধ্যে বিভিন্ন টেস্টের নামে মোটা অংকের বিল ধরিয়ে দেয় মা আয়েশা আক্তারকে। দুইদিন মোট বিল ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রাথমিকভাবে আয়েশা আক্তার হাসপাতালে ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকা ধীরে ধীরে দিয়ে দেবেন বলে সন্তানের চিকিৎসা চালাতে বলেন। কিন্ত সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ না করায় চিকিৎসাধীন যমজ শিশুসহ তাকে জোর করে বের করে দেন হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার (৫৭)। পরে যমজ এক শিশুর (আহমেদ) নির্মম মৃত্যু ও অপর জনকে (আব্দুল্লাহ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশুটি সেখানে চিকিৎসাধীন।

অমানবিক এই ঘটনায় যমজ শিশুর মা আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় বাংলাদেশ হাসপাতালের মালিক ও পরিচালককে আসামি করে একটি মামলা (নম্বর ৪২) দায়ের করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে যৌথ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আমার বাংলাদেশ হাসাপাতালের মালিক গোলাম সরোয়ারকে গ্রেফতার করে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৩ এর সদস্যরা। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন গোলাম সরোয়ার।

** দালালি থেকে হাসপাতাল ব্যবসা শুরু সরোয়ারের
** বিল না পেয়ে শিশুর মাকে নির্যাতন করেন হাসপাতাল মালিক
** হাসপাতাল থেকে বের করে দিল যমজ শিশুকে, রাস্তায় এক শিশুর মৃত্যু!

বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২২
এজেডএস/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।