ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে ইসি নিয়োগ আইনের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২২
অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে ইসি নিয়োগ আইনের দাবি

ঢাকা: জনগণের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে নাগরিক সমাজ তথা সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগের আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে বলা হয়—স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে প্রায় একমাস রাষ্ট্রপতির সাথে নিবন্ধিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আলোচনার শেষ দিনে মন্ত্রিসভায় নির্বাচন কমিশন আইনের খসড়া অনুমোদন আশাব্যঞ্জক। তবে সাংবিধানিক অঙ্গীকারের প্রতিফলক এ ধরনের জনগুরুত্বপূর্ণ একটি আইন পাশের পূর্বে পূর্ণাঙ্গ যাচাই-বাছাইসহ নাগরিক সমাজ তথা অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত করা প্রয়োজন। আর সে লক্ষ্যে আইনটির খসড়া অবিলম্বে সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাংবিধানিক অঙ্গীকার ও আপামর জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়ে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের পথে অনেকটা আকস্মিকভাবে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ইতিবাচক। নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে নিবন্ধিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির গতকাল সমাপ্ত আলোচনা শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই নাগরিক সমাজ নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের তাগিদ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় আলোচনায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দলও কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি জানায়। আলোচনায় অংশ নেওয়ার আগ মূহূর্তে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচন কমিশন আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করে।

গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, বরাবরের মতো সার্চ কমিটির মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে আইনটিতে; যা আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু সার্চ কমিটির জন্য কিছু সাধারণ মানদণ্ড নির্ধারণ করার বাইরে খসড়া আইনে কী আছে, তার বিস্তারিত এখনো সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও নাগরিক সমাজের অজানা।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, বিশেষ করে সার্চ কমিটিতে নারী প্রতিনিধি থাকবে কিনা, কমিটিতে যে দু’জন নাগরিক প্রতিনিধির কথা বলা হচ্ছে তাদের যোগ্যতার মাপকাঠি কী হবে, কমিটির কর্মপদ্ধতি কীরূপ হবে, কমিটি কর্তৃক প্রস্তাবিত নামসমূহ প্রকাশ করা হবে কিনা, সর্বোপরি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ও অন্যান্য কমিশনারদের যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে তারা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অবস্থান সমুন্নত রাখার মতো সৎসাহস ও দৃঢ়তাসম্পন্ন হবেন—এই নিশ্চয়তা বিধানের পদ্ধতি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা অপরিহার্য।

এই লক্ষ্যে অবিলম্বে আইনটির খসড়া উন্মুক্ত করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ নাগরিক সমাজের মতামতের ভিত্তিতে আইনটি চূড়ান্ত করতে হবে। অন্যথায়, দেশের আপামর জনগণের বহুল প্রত্যাশিত স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের সম্ভাবনা আবারও নস্যাৎ হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও নাগরিক সমাজের মতামত ও যাচাই-বাছাই ছাড়া আইনটি পাশ করা হলে এর গ্রহণযোগ্যতা যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হবে, তেমনি কার্যকারিতা নিয়েও নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না। তাই জনপ্রত্যাশাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সর্বজনের মতামতের ভিত্তিতে আইনটি পাশের বিকল্প নেই।

নির্বাচন কমিশন গঠনে বর্তমানে কোনো আইন নেই। বিগত দুই মেয়াদ ধরে রাষ্ট্রপতি দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে গঠিত সার্চ কমিটির প্রস্তাবের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এবারও সেই ধারাবাহিকতায় দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই পাঁচ বছরের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।