ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

দেখতে দামি ব্র্যান্ডের মদ, ভেতরে স্পিরিট-রং

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২২
দেখতে দামি ব্র্যান্ডের মদ, ভেতরে স্পিরিট-রং নকল মদ

ঢাকা: ভাঙ্গারির দোকানের মদের খালি বোতল আবারো নতুন হিসেবে চলে যাচ্ছে ক্রেতার হাতে। তবে ভেতরে মদের পরিবর্তে থাকে স্পিরিট-রং ও বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান।

নামি-দামি ব্র্যান্ডের মোড়কে এমনভাবে ভেজাল মদ বোতলজাত করা হচ্ছে, যা স্বভাবিকভাবে বুঝার কোনো উপায় নেই। নিজেরা মদ তৈরি করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলে ভরে এভাবেই বাজারজাত করে আসছিল একটি চক্র।

প্রায় ছয় মাস ধরে ভেজাল মদের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে আসা এই কারখানার সন্ধান পায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। রামপুরার রিয়াজবাগের ভেজাল মদের ওই কারখানাটিতে অভিযান চালিয়ে আশরাফুজ্জামান ওরফে মোশারফ (৩৫), মো. আবুল খায়ের চৌধুরী (৬৯) ও মো.হায়দার ভূঁইয়া (৩৬) নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় ওই কারখানা থেকে ১০ বোতল বিদেশি ব্লাক লেবেল, ৫ বোতল নেমিরোফ, ৮ বোতল কেরুস ফাইন ব্রান্ডি, মদ তৈরির উপকরণ ইথানল ২০ লিটার, এসেন্স ৪০০ গ্রাম, চারকল পাউডার ৪৫০ গ্রাম, বোতলিং করার পাইপ ১টি, বিদেশি মদের লেবেল ৮০টি, মদের কর্ক ৮০টি, খালি বোতল ৩০ টি ও একটি স্টিলের চোঙ্গা জব্দ করা হয়েছে।

শুক্রবার (৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএনসির উপপরিচালক (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) মো. রাশেদুজ্জামান।

তিনি বলেন, একটি চক্র বাজারে নকল মদ সরবরাহ করে মানুষকে মৃত্যু ঝুঁকিতে ফেলছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কারখানাটির সন্ধান পাওয়া যায়। অভিযানে কারখানার মালিক মোশারফসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া অভিযানে বিপুল পরিমাণে ভেজাল মদ তৈরি উপকরণ জব্দ করা হয়েছে।

ভেজাল মদ তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান বলেন, বিভিন্ন ভাঙ্গারির দোকান থেকে চক্রটি প্রথমে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদের খালি বোতল সংগ্রহ করে। পরে তারা অবৈধভাবে মদ তৈরি করার স্প্রিরিট তৈরি করে। এছাড়া মদ তৈরি করার আরও রাসায়নিক উপকরণ সংগ্রহ করে চক্রটি। পরে এমনভবে তারা ভেজাল মদ তৈরি করে বোতলজাত করে, যা দেখলে কোনোভাবে মনে হবে না সেসব নকল নকল। পরে তারা বাজারে আসল মদ বলে এই ভেজাল মদ বিক্রি করে আসছে।

গত ছয় মাস ধরে চক্রটি ভেজাল মদ তৈরি করে বিক্রি করে আসছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে তারা কোনো ওয়্যার হাউজের কাছে মদ বিক্রি করতো না। তারা খুচরাভাবে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে মদ বিক্রি করতো।

ভেজাল মদ মানুষজন কেন কিনছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মদের দাম একেক সময় একেক রকম থাকে। ভেজাল মদের তো দামের কোনো সীমা নাই। ভেজাল মদের তৈরি খরচই তো অনেক কম। এছাড়া তারা ভেজাল মদের এমনভাবে বোতলজাত করে যে মানুষ বুঝতে পারে না এটা আসল নাকি নকল।

যারা তাদের কাছ থেকে কিনেছে তারা আসল মদ মনে করেই নিয়ে যাচ্ছে। ভেজাল মদ চেনার কোনো উপায় নেই। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে অবৈধ উৎস থেকে কোনো কিছু কিনলে এটা ভেজাল।

ভেজাল মদ তৈরির উপকরণের সংগ্রহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রেফতারদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এসব উপকরণের উৎস সম্পর্কে জানা যাবে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২২
পিএম/এসআইএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।