ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তা 

ছয় পরিবার পেল সেলাই মেশিন 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২২
ছয় পরিবার পেল সেলাই মেশিন  ছয় পরিবার পেল সেলাই মেশিন 

চট্টগ্রামের ফিটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ছাইল্যেছোর রিজার্ভ পাড়ার বাসিন্দা মানু মারমা। স্বামী অংচাক্রই মারমা দিনমজুর।

কখনো কাজ পান আবার কখনো কাজের অভাবে থাকতে হয় না খেয়ে। এই দম্পতির তিন সন্তান।

তাঁদের স্বপ্ন মানুষ হবে এই সন্তানগুলো। কিন্তু যেখানে পেট চালানোই দায়, সেখানে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। আস্তে আস্তে এই পরিবারের সব স্বপ্ন যখন ফিকে হয়ে যেতে লাগল, তখনই এই পরিবারের স্বপ্নপূরণের সারথি হলো বসুন্ধরা গ্রুপ। মানু মারমার মতো একই উপজেলার আরো চার পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্প পরিবার। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় এবং শুভসংঘের উদ্যোগে এই পাঁচ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় সেলাই মেশিন।  

সম্প্রতি ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের জহুরুল হক হল মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেলাই মেশিনগুলো হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র আলহাজ ইসমাইল হোসেন। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন শুভসংঘের পরিচালক ও কালের কণ্ঠের সিনিয়র সহসম্পাদক জাকারিয়া জামান।  

এতে সভাপতিত্ব করেন ফটিকছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র বলেন, ‘দেশের স্বনামধন্য শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরার এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, সেই সঙ্গে এমন মহৎ কাজের সঙ্গে যাঁরা শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। বসুন্ধরার মতো যদি সারা দেশের অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে অন্যান্য শিল্প গ্রুপ এগিয়ে আসে, তবে দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন আরো বেগবান হবে। সেই সঙ্গে আমি শুভসংঘের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি। ’

এদিকে সেলাই মেশিন হাতে পেয়ে চোখ মুছতে থাকেন মল্লিকা দেবী। তাঁর চোখেমুখে আনন্দ আর তৃপ্তি, যেন বেঁচে থাকার একটা অবলম্বন পেলেন। তিনি বলেন, ‘কত দিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছি একটু ভালো থাকার। এবার বোধ হয় একটু ভালো থাকার রাস্তা খুঁজে পেলাম। কাপড় সেলাই করে উপার্জন করব। পরিবারের কষ্ট দূর হবে আমার। আপনারা আমার জন্য আশীর্বাদ করবেন। ’

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মিঠানালা ইউনিয়নের পশ্চিম মলিয়াইশ গ্রামের সালমা আক্তার। স্বামী তাজুল ইসলাম চালাতেন অটোরিকশা। কয়েক মাস আগেও স্বামীর রোজগারের টাকায় কোনোমতে চলছিল সংসার আর দুই ছেলের পড়াশোনা। কিন্তু সাত মাস আগে সালমার স্বামী মারা যান লিভার ক্যান্সারে। স্বামী তাজুল ইসলামকে হারিয়ে ছোট্ট দুটি সন্তান নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছিলেন সালমা আক্তার। সন্তানদের পড়াশোনা আর দুই বেলা খাবারের সন্ধানে ছুটেছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। না খেয়ে কত দিন থাকতে হয়েছে তার হিসাব নেই। সেলাইলের কাজটি শিখে রেখেছিলেন সালমা। কিন্তু সেলাই মেশিন কেনার সামর্থ্য ছিল না তাঁর। এবার সালমার পাশে এসে দাঁড়াল বসুন্ধরা গ্রুপ। সালমা আক্তারকে স্বাবলম্বী করতে এরই মধ্যে দেশের শীর্ষ এই শিল্প গ্রুপের অর্থায়নে এবং কালের কণ্ঠ শুভসংঘের উদ্যোগে একটি সেলাই মেশিন ও পোশাক তৈরির উপকরণ দেওয়া হয়। সহায়-সম্বলহীন থাকা অসহায় সালমা আক্তার নিজের অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘এত দিন নিরুপায় ছিলাম। আমার দুটি সন্তান নিয়ে অসহায়ের মতো দিন অতিবাহিত করেছি। আমি সেলাই মেশিনসহ আপনাদের এসব সহযোগিতা নিয়ে অবশ্যই স্বাবলম্বী হতে পারব। ’

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।